বিয়ের প্রথম রাতেই স্বামী কোনও অজুহাতে তার সঙ্গে না থেকে মা-বাবার ঘরে চলে যান। তখনও কিছু না ভেবে মেয়েটি নিজেকে বুঝিয়ে নেন। কিন্তু পরদিন থেকে স্বামীর ব্যবহার বদলে যায়। কটাক্ষ, অপমান—সব কিছু যেন রুটিন হয়ে দাঁড়ায়। “তুমি দেখতে ভাল না”, “তোমার শরীরের গঠন ঠিক না”—এসব কথা শুনতে শুনতে একসময় তা সহ্যের বাইরে চলে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান রেলের এক ভুলেই এই কৃষক হয়েছিলেন গোটা ট্রেনের মালিক! পুরো ঘটনা জানলে অবাক হবেন আপনিও…
‘নোরা ফাতেহির মতো ফিগার চাই’—প্রতিদিনের তিরস্কার স্বামী বলত, “তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি চাইলে নোরা ফাতেহির মতো মেয়ে পেতাম।” আর সেই কথা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিন ঘণ্টা জিমে পাঠানো হতো তাকে। কোনও দিন কম সময় এক্সারসাইজ করলে, সেদিন খেতেও দেওয়া হত না। মেয়েটি হন্যে হয়ে পড়ে স্বামীর ভালোবাসা পেতে, কিন্তু বদলে পায় অপমান আর অমানবিকতা।
একদিন হঠাৎ তিনি দেখেন, স্বামী একজন তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চ্যাট করছে। মেয়েটি প্রতিবাদ করে। কিন্তু সে প্রতিবাদ তাকে আরও বড় যন্ত্রণায় ফেলে। স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে।
আরও পড়ুন: ট্রেনের কনফার্ম টিকিট বাতিল করলে কত টাকা কাটা যেতে পারে জানেন! জানুন পুরো হিসাব…
শরীরের উপর মানসিক চাপ বেড়েই চলছিল। এরই মধ্যে একদিন মেয়েটি বুঝতে পারেন, তিনি গর্ভবতী। আশায় বুক বাঁধেন, এবার হয়তো পরিবার তার গুরুত্ব দেবে। তিনি শাশুড়িকে বিষয়টি জানান। কিন্তু উত্তর আসে—নির্বিকার অবহেলা।
সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনা ঘটে এর কিছুদিন পর। একদিন স্বামী একটি ওষুধ খেতে দেন তাকে। সন্দেহ হলে তিনি ইন্টারনেটে সার্চ করেন এবং দেখতে পান, এটি গর্ভপাতের ওষুধ। পরদিন শরীর ভেঙে পড়ে। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা নিশ্চিত করেন—তার গর্ভপাত হয়ে গেছে।
মেয়েটি আর সহ্য করতে পারেননি। চোখের জলে ভেজা কণ্ঠে, থানায় গিয়ে পুলিশের সামনে সব খুলে বলেন। থানায় উপস্থিত পুলিশরাও হতবাক হয়ে যান তার কাহিনি শুনে। যেভাবে নোরা ফাতেহির মতো ফিগার চেয়ে তাকে জিমে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, অপমান করা হয়েছে, গর্ভপাত পর্যন্ত ঘটানো হয়েছে—সব যেন বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। সব তথ্য যাচাই করে, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তারা আশ্বস্ত করেছে।