এই দৈত্যাকার গ্রহটি আবিষ্কার হয়েছিল ২০১৬ সালে। এই গ্রহের নিরক্ষরেখায় শক্তিশালী একটি ঝড়ের বিশালাকার বলয় বিরাজ করে। আসলে আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্যাসীয় গ্রহের বাইরে যে বলয় দেখা যায়, সেগুলির মতোই হয় এটিও। যদিও ঝড় বা হাওয়ার গতিবেগ এখনও বেশ রহস্যজনক। গত ২১ জানুয়ারি Astronomy and Astrophysics জার্নালে এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ঝড় বা হাওয়ার গতিবেগ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জায়ান্ট টেলিস্কোপ (ভিএলটি)-র সাহায্যে চিলিতে অবস্থিত ইউরোপিয়ান সাদার্ন অবজারভেটরি (ইএসও)-র বিজ্ঞানীরা এই ঝড়ের গতিবেগ পরিমাপ করেছেন।
advertisement
গতিবেগ ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৯ কিলোমিটার:
এই গবেষণার প্রধান লেখক হলেন জার্মানির University of Göttingen-এর অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট লিসা নর্টম্যান। তিনি বলেন, ওই গ্রহের বায়ুমণ্ডলের একটি অংশ আমাদের দিকে অত্যন্ত তীব্র বেগে এগিয়ে আসছে। যদিও অন্যান্য অংশ একই গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা একটা ইঙ্গিত যে, গ্রহটির নিরক্ষরেখায় একটি দ্রুত জেট স্ট্রিম রয়েছে। WASP-127b-এ হাওয়ার গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৯ কিলোমিটার হয়। যা ক্যাটাগরি ৫ হারিকেনের মাত্রার তুলনায় ১৩০ গুণ বেশি। নাসা-র বক্তব্য, নেপচুন গ্রহের সবথেকে বড় জেটস্ট্রিমের হাওয়ার তুলনায় এটি ১৮ গুণ বেশি। যা ঘণ্টা প্রতি ১৮০০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে। সৌরজগতে রেকর্ড করা এটাই দ্রুততম হাওয়া।
গ্রহের তাপমাত্রা কত?
গবেষকরা গ্রহের বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যাওয়া আলো বিশ্লেষণ করে WASP-127b-এর মেঘের গঠন নির্ধারণ করেছেন। এটা প্রদর্শন করেছে যে, জলীয় বাষ্প এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড উভয়ই ঘূর্ণায়মান মেঘের মধ্যে উপস্থিত রয়েছে। যদিও এই দুই যৌগ উপাদানই পৃথিবীতে থাকা প্রাণের সঙ্গে যুক্ত। ভিএলটি- থেকে প্রাপ্ত তাপমাত্রা সংক্রান্ত তথ্যে দেখানো হয়েছে যে, WASP-127b-র মেরু অঞ্চলের তুলনায় গ্রহের বাকি অংশ বেশি ঠান্ডা। গ্রহে দিন এবং রাতের তাপমাত্রার মধ্যে অল্পই ফারাক থাকে। বর্তমানে শুধুমাত্র দূরবর্তী গ্রহগুলির হাওয়ার গতিবেগ পরিমাপ করতে পারে ভিএলটি-র মতো গ্রাউন্ড-বেসড টেলিস্কোপ।