কুশীনগর, উত্তর প্রদেশ: বিয়েবাড়িতে ডিজে নিয়ে ধুন্ধুমার। কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি, মারামারি। শেষে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর হামলা। সংঘর্ষে কনের ভাই অজয় পাসওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। সত্যম নামের আরেক ভাই গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বরপক্ষের এক যুবকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভেঙে গিয়েছে। জখম নিমন্ত্রিতদের ভর্তি করা হয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গান বাজানো নিয়ে বিয়েবাড়ি যে এমন রণক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে ভাবতে পারছেন না কেউই। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
advertisement
জানা গিয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দেবরিয়ার রুদ্রপুরের রাহুলের সঙ্গে কুশীনগরের পাইকৌলি লালা গ্রামের লালমোহন পাসওয়ানের কন্যা সঞ্জনার বিয়ে ঠিক হয়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বরযাত্রী নিয়ে বর পৌঁছন কনের বাড়ি। উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় কনেপক্ষ। দ্বারপূজা এবং মালাবদল হয়। তারপর শুরু হয় খাওয়াদাওয়া।
রাত ১০টা নাগাদ ডিজে-তে ভোজপুরি গান বাজানো নিয়ে প্রথম ঝামেলাটা বাঁধে। প্রথমে ঝগড়া। সেখান থেকে হাতাহাতি। অভিযোগ, পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, বরপক্ষের লোকজন মধ্যস্থতা করতে আসা কনের ভাইদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
হামলায় অজয় পাশওয়ান, সত্যম পাশওয়ান এবং রামা পাশওয়ান গুরুতর জখম হন। চিকিৎসার জন্য তাঁদের সিএইচসি সুখরৌলিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গোরখপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। চিকিৎসার সময় অজয় পাসওয়ানের মৃত্যু হয়।
কনেপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত। ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে ৮ জনকে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরই বিয়ের আসর ছড়ে বরযাত্রীরা পালিয়ে যান। এমনকী বরের পরিবারও আর সেখানে এক মুহূর্ত দাঁড়ায়নি।
কনের পরিবারের দাবি, গত বছরই সঞ্জনা এবং দীপকের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তারপরই বরের বাবার মৃত্যু হয়। পিছিয়ে দেওয়া হয় বিয়ে। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিন ঠিক হয়। কিন্তু সেদিন যা কাণ্ড হল, শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মৃতের মা বলেন, “ডিজে বন্ধ করতে বলা নিয়ে ঝগড়া হয়। আমার ছেলে গান বন্ধ করতে বলেছিল। তখনই বরযাত্রীরা তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।”
সিও কুন্দন সিং জানান, “বিয়ের আসরে ডিজে-তে ভোজপুরি গান বাজানো নিয়ে কনে ও বরপক্ষের মধ্যে বচসা বাঁধে, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। বরযাত্রীরা কনের ভাইকে হত্যা করে। ঘটনার পর বর-সহ বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৮ জন বরযাত্রীকে আটক করেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের ভিডিও পরীক্ষা করে পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”