বর্ধমান শহরের কার্জন গেটের বিপরীত দিকের রাস্তা দিয়ে জেলা পরিষদ, কোর্ট চত্বরের দিকে কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর রাস্তার ডান দিকে গীতাঞ্জলি পার্ক পার করে রাস্তার বাম দিকে মোড় নিলেই হদিশ মেলে বিরিয়ানি দোকানটির।
আরও পড়ুন : বিড়াল আগেই জানতে পারে ‘ভবিষ্যত’! ঘরের বাইরে বিড়ালের এই লক্ষণ দেখলে সতর্ক হন
advertisement
এই সুলভ মূল্যের বিরিয়ানি প্রসঙ্গে দোকানের মালিক প্রদীপ রাউৎ জানান, “৩ জুলাই সোমবার থেকে চালু করেছি এই দোকান। বর্ধমানবাসীর রেসপন্স খুব ভাল প্রতিদিন আমি আসার আগেই ৩০-৪০ জন মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে এবং অনেক মানুষকে খাওয়াতে পারি না তার জন্য খুবই দুঃখিত। প্রথমে দু কেজি দিয়ে বিরিয়ানি শুরু করেছিলেন। এখন ৮ কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে। চিকেন বিরিয়ানিতে থাকছে বিরিয়ানি এক পিস আলু এবং এক পিস মাংস। ডিম আলাদা করে ১০ টাকা এবং চিকেন চাপ ১৫ টাকা। বিরিয়ানি বসে খেলে দাম ৩০ টাকা এবং পার্সেল নিয়ে গেলে ৪০ টাকা। এটা আমি চেষ্টা করলাম বর্ধমানবাসীদের জন্য। নতুন কনসেপ্ট নিয়ে এসেছি ৩০ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি। পুরোটাই বিক্রির উপর নির্ভর করছে যে লাভ হবে কি হবে না, দেখা যাক।”
বর্ধমান শহরের বাদামতলা এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ রাউতের এই দোকানটিতে বিরিয়ানি নেওয়ার জন্য রীতিমতো লাইন পড়ে রোজ। তাই বিরিয়ানি নিয়ে আসার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই নাকি শেষ হয়ে যায়। দোকান মালিক প্রদীপ রাউত আরও জানিয়েছেন তিনি প্রাইভেট সেক্টর এর চাকরি ছেড়ে এই বিরিয়ানির দোকান খুলেছেন। এর আগে বছর দশেক তিনি হুগলি জেলায় প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেছেন।
চাকরি ছেড়ে বিরিয়ানির ব্যাবসা শুরু করার প্রসঙ্গে প্রদীপ জানান ,”এর আগে হুগলি জেলায় একটি কোম্পানিতে কাজ করতাম। দশ বছর নিজের মাথা প্রাইভেট কোম্পানিকে দিয়েছি এবার ভাবলাম মাথাটা একটু নিজের জন্য লাগাই। বর্ধমানবাসী বিরিয়ানি খেতে খুব ভালোবাসে, সেজন্য কনসেপ্টটা নিয়ে এসেছি কম দামে ভাল বিরিয়ানি খাওয়ানোর জন্য। পরিবারে রয়েছে ৭ জন। পরিবারের দায়িত্ব প্রায় অর্ধেক নিতে হয়। চাকরি আমি হুগলি জেলায় করতাম সকাল সাতটায় বেড়িয়ে রাত্রি দশটায় বাড়ি ঢুকতে হত। আসার সময় আমি দেখতাম যে তিন ঘণ্টা তিন ঘণ্টা করে ৬ ঘণ্টা সময় আমার নষ্ট হচ্ছিল এটা আমার খুব খারাপ লাগত। চাকরি ছাড়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি ঠিক করেছি এই সময়টাকে আমি কাজে লাগাব।”
বিরিয়ানি নিতে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও একটা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গিয়েছে, মেমারি থেকে আসা শ্রীকান্ত নায়েক জানান, “বিরিয়ানি কেমন হবে বলতে পারব না, কোয়ালিটি সম্পর্কে তো কিছুই বলতে পারব না আগে খেয়ে দেখব তারপর বুঝব কেমন। দামটা সস্তা সেই কারণেই আরও আসা। বর্ধমানে ৩০ টাকায় বিরিয়ানি প্রথম আমার চোখে এর আগে পড়েনি।
প্রদীপ রাউত আরও বলেন, “দোকান খোলার সময় দুপুর বারোটা আবার কোনও কোনও দিন সাড়ে বারোটা একটাও হয়ে যায়। দিন দিন কোয়ান্টিটি বাড়ছে তাই একটু দেরি হচ্ছে, চেষ্টা করি সবাইকে সেবা দেওয়ার”। বর্ধমান শহরের এই তিরিশ টাকার বিরিয়ানির দোকানটি সপ্তাহের ছয় দিন খোলা থাকে। প্রত্যেক রবিবার দোকান বন্ধ থাকে বলে জানিয়েছেন প্রদীপ রাউত।