বালুরঘাট শহরের বুক চিরে চলা আত্রেয়ি নদীতে বিগত তিন বছর আগে পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে স্বল্প উচ্চতার যে কংক্রিটের ড্যাম তৈরি করা হয়, সেই ড্যামের গার্ডওয়াল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ তারিখ রাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর নদীর পশ্চিম পাড়ে বেশ কিছু এলাকা নদীগর্ভে চলে যায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতারাতি দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হলেও অভিযোগ উঠে সম্পূর্ণ কাজ শেষ না করেই এলাকা ছেড়েছেন ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা। ফলে বর্ষার আগে মেরামতি কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বিপদের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
advertisement
আরও পড়ুন: ঝাড়ুদারদের দিন শেষ! রাস্তা পরিষ্কারের ঝামেলার দিনও শেষ! এই গাড়ি রাস্তায় ছুটলেই সব হয়ে যাবে ঝাঁ চকচকে
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গার্ডওয়াল ভেঙে যাওয়ার পর বালির বস্তা দিয়ে নদীগর্ভে কিছুটা অংশে বাঁধ তৈরি করা হয়। এরপর গার্ডওয়ালের প্রধান যে স্ট্রাকচার রয়েছে তার নীচ দিক দিয়েই জল প্রবাহের ফলে ব্যাপক সম্মুখীন হচ্ছে আত্রেয়ি নদীর ড্যাম। দেড় মাস কেটে গেলেও বালির বস্তা নদীতে ফেলা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। জল আটকাতে না পেরে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন ঠিকাদাররা। বর্ষা এলে বিপদ বাড়বে এমন আশঙ্কা জেনেও কার্যত বসে রয়েছে সেচ দফতর।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সেচ দফতরের আধিকারিকরা। জল বন্ধ করতে না পেরে আপাতত বাঁধের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। সংস্কারের জন্য জেলা সেচ দফতরের কাছে পর্যাপ্ত ফান্ড নেই। মেরামতের জন্য রাজ্যের কাছে ৮৭ লক্ষ টাকা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই ফান্ড এলেই কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, “বর্ষার আগেই ওই ড্যামে কাজ করার জন্য কথা হয়েছে। সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বর্ষার আগেই ভাঙন রুখতে কাজটি করার জন্য তাদেরকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, নীচ দিক দিয়ে জল প্রবাহের ফলে স্ট্রাকচারের নীচের মাটি প্রতিদিনই সরে যাচ্ছে। ফলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। বর্ষার সময় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে ঘরবাড়ি, চাষের জমি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, বর্ষার আগেই আত্রেয়ি নদীর উপরে স্বল্প উচ্চতার যে ড্যাম রয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মেরামতি নিশ্চিত করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে না পড়তে হয়। যথাসময়ে ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
সুস্মিতা গোস্বামী