কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে এসে এই স্টল সাজিয়েছেন অভিজিৎ বসাক। আজকের দিনে যেখানে ডট পেনেই লেখার অভ্যাস গড়ে উঠেছে সকলের, সেখানে দোয়াত-কলমের বোতল খুলে কালির গন্ধে ডুবে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকের কাছেই ইতিহাস। সেই অভিজ্ঞতাকেই ফের নতুন করে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ২০০ টাকা থেকে শুরু ইনকপেন। দেখতে সরল, কিন্তু সেই সরলতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে অতীতের টান।
advertisement
এখানেই শেষ নয়। অভিজিতের স্টলে আরেক চমক – সম্পূর্ণ বাংলায় লেখা হাতঘড়ি। সত্যজিৎ রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল আরও নানান ব্যক্তিত্বের পোর্ট্রেট আঁকা ডায়াল। সংখ্যাগুলোও বাংলায়। যেন কবিতার মতো বয়ে চলা সময়কে ধরে রাখা এক ছোট্ট শিল্পকর্ম। মহিলা এবং পুরুষ – দু’রকম ডিজাইনেই পাওয়া যাচ্ছে। দাম শুরু প্রায় দেড় হাজার টাকা থেকে। ঘড়িগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে মানুষ বারবার বলছেন, “এমন তো আগে কখনও দেখিনি!”
প্রথমবার শিলিগুড়ি বইমেলায় এসেই এই সাড়া পেয়ে অভিভূত অভিজিৎ জানাচ্ছেন, “নতুন প্রজন্মকে পুরোনো দিনের জিনিস চিনিয়ে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য। আমাদের বাবা-মায়ের সময় এগুলোই ছিল নিত্য ব্যবহার্য। এখনকার ছেলেমেয়েরা সেই ছোঁয়া পায় না। তাই আমি চাই তারা জানুক, দেখুক- কেমন ছিল সেই সময়।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ঠিক সেই উদ্দেশ্যই যেন সার্থক হচ্ছে। কলেজ পড়ুয়া থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রী-নানা বয়সের মানুষ ভিড় জমাচ্ছে অভিজিতের স্টলে। হাতে নিয়ে দেখছে দোয়াত-কলম, আঙুল বুলিয়ে দেখছে বাংলা হরফের ঘড়ি। কেউ কিনছে, কেউ শুধু দেখেই মুগ্ধ হয়ে বলছে, “এগুলো তো যেন ছোটবেলার গল্পের মতন!”
শিলিগুড়ির বইমেলায় তাই শুধু বই নয়, এই ছোট্ট স্টলটি হয়ে উঠেছে স্মৃতির দোকান। যেখানে সময় থমকে দাঁড়িয়েছে, আর নতুন প্রজন্ম খুঁজে পাচ্ছে পুরোনো দিনের এক অচেনা-মায়াবী স্পর্শ।





