১৪ বছর বয়সি স্কুল পড়ুয়া রাজদীপ ঘোষের বাড়ি বালুরঘাট শহরের উত্তরায়ণ এলাকার মণ্ডল পাড়ায়। তপন ব্লকে গ্রামের বাড়ি হলেও প্রায় পাঁচ বছর বয়স থেকে সে বালুরঘাটে দাদুর বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করছে। সে বালুঘাটের সেন্ট পিটার্স স্কুলের ছাত্র। তার একের পর এক শিল্পী সত্ত্বা তাক লাগাচ্ছে বালুরঘাটবাসীকে। এ’বছর প্রথম সরস্বতী প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়ে উৎসাহিত রাজদীপ। ভবিষ্যতে আর্ট ও ক্রাফ্ট নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সে।
advertisement
ক্ষুদে মৃৎশিল্পী রাজদীপের কথায়, “এখন মাটি ৩০০ টাকা প্রতি ভ্যান, খড় ৪০০ টাকা পণ ও বাঁশ ১০০ টাকা পিস অনুযায়ী কিনতে হচ্ছে। এই দাম ক্রমশ বাড়ছে। তার তুলনায় প্রতিমার দাম তুলনামূলক কম। তবু কিছুটা লাভ হচ্ছে। ভবিষ্যতে আর্ট এন্ড ক্রাফ্ট নিয়ে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। আমার বানানো সরস্বতী প্রতিমা বাড়িতে পুজো হয়েছিল। সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে দেওয়ার পরেই সকলের নজরে পড়ে।”
গত বছর সাহস করে হাতে গড়া ডাকের সাজের প্রতিমার ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে দিয়েছিল রাজদীপ। তখনই তাঁর প্রতিভা সকলের নজরে আসে। ফলে এ’বছর ছোট-বড় মিলিয়ে ১১ টি সরস্বতী প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছে সে। যার মধ্যে রয়েছে রাজুয়ার হাই স্কুলের ৬ ফিট উচ্চতার প্রতিমা-ও। এটি বানাতে তাকে টানা একমাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সারাদিনে তিন ঘণ্টা মতো চলে যায় প্রতিমা তৈরির কাজে। মাত্র আট বছর বয়স থেকেই প্রতিমা করছে রাজদীপ।
মামা চন্দন পালের হাত ধরেই রাজদীপের প্রতিমা তৈরিতে হাতেখড়ি। বর্তমানে সে ডাকের সাজ, শোলার কাজ, টোপর-সহ একাধিক কাজ করছে নিজের হাতেই। এবছর স্বল্পমূল্যেই বিভিন্ন প্রতিমার বরাত নিয়েছে রাজদীপ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁর কাজ প্রশংসা পাচ্ছে। প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে পরিবারেরও পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। প্রতিমার কাঠামো থেকে শুরু করে কাপড় পরানো, অলংকার-সহ চক্ষুদানও হচ্ছে ক্ষুদে শিল্পীর একার হাতে।
সুস্মিতা গোস্বামী