এদিকে পর পর বাঘের (Royal Bengal Tiger Found in Buxa) ছবি পাওয়ায় খুশি পর্যটকরা। জঙ্গলের নিরাপত্তা বাড়াল বন দফতর। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে (Buxa Tiger Reserve) পা রাখছেন রাজ্যের বন্যপ্রাণ বিভাগের প্রধান মুখ্য বনপাল দেবল রায়। সেদিন বক্সায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে। রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রীয় মল্লিক বলেন, “ মঙ্গলবার পি সি সি এফ দেবল রায় বক্সাতে যাবেন। তিনি সব কিছু খতিয়ে দেখবেন। বক্সার বনাধিকারিকদের সাথে বৈঠক করে আমাকে রিপোর্ট দেবেন। পর পর রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি ধরা পড়ায় আমরা খুশি। বাঘেদের নিরাপত্তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।“
advertisement
রবিবারই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দ্বিতীয় ছবি প্রকাশ করার সময়ই বক্সাতে (Royal Bengal Tiger Found in Buxa) আপাতত কার সাফারি বন্ধের কথা ঘোষণা করেছেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ শেওয়া। আপাতত পাঁচদিন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে (Buxa Tiger Reserve) কার সাফারি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বনাঞ্চল পর্যটকদের জন্য খোলা থাকছে। এছাড়া ট্র্যাপ ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে। ২০০ ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্যাঘ্র প্রকল্পে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য তৈরি করা হয়েছে মনিটরিং টিম।
আরও পড়ুন: রবীনকে প্রণাম, সুজনের সঙ্গে করমর্দন কুণালের! রবিবাসরীয় বিকেল দেখল 'ব্যতিক্রমী দৃশ্য'...
এদিন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (Buxa Tiger Reserve) ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, “পর পর বাঘের ছবি ধরা পড়ায় আমরা খুশি। ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। এখন শুধু রাত বা শুধু দিনে টহল চলবে না। ২৪ ঘণ্টা বক্সা ব্যাঘ্র (Royal Bengal Tiger) প্রকল্পের বনাঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা থাকবে। আপাতত আমরা পাঁচদিন ব্যাঘ্র প্রকল্পে কার সাফারি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বক্সাতে বাঘেদের কোন অসুবিধে যাতে না হয় সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর পর রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি ধরা পড়ার ঘটনাটি বক্সা সহ এই এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে আমি সকলের কাছে আবেদন রাখছি এই বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে সহযোগিতা করার জন্য।”
পর পর বাঘের ছবি ধরা পড়াতে খুশি বনবস্তির মানুষেরাও। তবে পাশাপাশি উচ্ছেদের আতঙ্কেও রয়েছেন তারা। এবার কি তাহলে বাঘ বাচাতে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর এলাকায় থাকা বনবস্তিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করবে বনদফতর। শনিবার ইতিমধ্যেই ভুটিয়াবস্তি ও গাঙ্গুটিয়া বস্তিকে সরানোর কথা বলেছিলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
জানা গিয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ৪২ টি বনবস্তি রয়েছে। এই সব বনবস্তিগুলোতে কয়েক হাজার মানুষ বাস করেন। বনের ওপর চাপ কমাতে এই বনবস্তিগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া ১৯৯৪ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বনজন শ্রমজীবী মঞ্চের নেতা বন বস্তির বাসিন্দা লালসিং ভুজেল বলেন, “ আমরা সরতে রাজি আছি। কিন্তু উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও বসবাসের জায়গা দিতে হবে। না হলে কিন্তু ১৯৯৪ সালের মত ভুটিয়া বস্তি উঠে তিনটে ভুটিয়া বস্তি তৈরি হবে। বক্সাতে রয়াল বেঙ্গলের ছবি ধরা পড়েছে । আমরা খুশি। আগে রয়াল বেঙ্গল ছিল, আমরাও ছিলাম এই বনাঞ্চলেই। কোন অসুবিধে হয়নি। তাহলে হঠাৎ কেন রয়াল বেঙ্গল নেই হয়ে গেল এই বনাঞ্চলে। সেটা ভাবা উচিত।”
তবে বনবস্তির বাসিন্দারা যাই বলুন পর পর বাঘের ছবি ধরা পড়ার পর জঙ্গলের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে বৈঠক করে একটি মনিটরিং কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব ও পশ্চিম দুই বিভাগের অভিজ্ঞ আধিকারিকদের নিয়ে এই মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে। তারা ২৪ ঘণ্টা জঙ্গলে নজরদারি চালাবে। শুধু তাই নয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ২০০ ট্র্যাপ ক্যামেরার লেন্সে নজরবন্দী হচ্ছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে সমস্ত এলাকা। জলদাপাড়া থেকে ধার করে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে বক্সায়।
রাজকুমার কর্মকার