সেই শিশুকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার কথা প্রথমে বলা হয়েছিল। অথবা বেসরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তির কথাও বলা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারী হাসপাতালেই হল শিশুর সফল অস্ত্রপচার! গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে অসুস্থ ছিল শিশুটি। তার বাবা ডুয়ার্সের নাগরাকাটার হিলা চা বাগানের শ্রমিক। কোনো খাবারই হজম হচ্ছিল না শিশুটির। খাওয়া শেষ হতে না হতেই বমি! অসহ্য পেটের ব্যথায় কাতরাচ্ছিল দুধের শিশুটি! ঘুম উড়ে গিয়েছিল বাবা, মায়ের।
advertisement
বাগানের কাছেই শুল্কাপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথমে শিশুটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। তার পর মালবাজার মহকুমা হাসপাতাল। সেখান থেকে এনে ভর্তি করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে। প্রথমে এখানে শিশুর বাবাকে বলা হয় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে। কিন্তু তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। ফলে সেটা সম্ভব নয় বলে সাফ চিকিৎসককে জানিয়েছিলেন শিশুর বাবা অরুন ওঁরাও। এমনকী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মতো সাধ্যও নেই তাঁদের। তখনই চিকিৎসকেরা পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুন- মাত্র ৪৫ দিনে ১ লক্ষ শংসাপত্রে সই! অসাধ্য সাধন আলিপুরদুয়ার মহকুমা শাসকের
শিশুটি খাদ্যনালীতে জটিল সমস্যায় ভুগছিল। গর্ভাবস্থায় বেড়ে ওঠার সময়েই সমস্যার সৃষ্টি। ওজনও বেশি নয়। তিন কেজিরও কম। যথেষ্ট ঝুঁকির অস্ত্রোপচার জেনেও চিকিৎসকেরা সময় দেন। আজ চার সদস্যের চিকিৎসকদের দল শিশুটির অস্ত্রোপচার করেন। দেড় ঘন্টা পর ওটি রুম থেকে বেরিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন চিকিৎসকেরা। উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের জানিয়ে দেন, অস্ত্রোপচার সফল। সরকারী হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচার খুবই বিরল। তবে সেই বিরল কাজই আজ করে দেখালেন মেডিকেলের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা। সরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর সাধারণের ভরসা কয়েকগুন বেড়ে গেল। একের পর এক শিশু মৃত্যু নিয়ে যখন আঙুল উঠছে সরকারী ব্যবস্থার উপর, তখন এই শিশুর সফল অস্ত্রোপচার অন্য ছবি দেখাল। খুশি অভিভাবকেরা। আপাতত শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।