#আলিপুরদুয়ার: মাত্র ৪৫ দিনে প্রায় এক লক্ষ সই! অবাস্তব মনে হলেও এই কাজ বাস্তবে করেছেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার। সব কাজ সামলে ৪৫ দিনে প্রায় এক লক্ষ জাতিগত শংসাপত্রে সই করে কার্যত রেকর্ড করেছেন তিনি। আর এই বিপুল পরিমান জাতিগত শংসাপত্র বিলি গোটা রাজ্যে নজির গড়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা। শংসাপত্র বিলিতে গোটা রাজ্যে প্রথম আলিপুরদুয়ার জেলা। দ্বিতীয় স্থানে মালদহ।
এবছর দুয়ারে সরকারের শিবির শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১ লক্ষ জাতিগত শংসাপত্র বিলি করেছে আলিপুরদুয়ার প্রশাসন। এর মধ্যে দুয়ারে সরকারের শিবিরেই ৮৭ হাজার জাতিগত শংসাপত্রের আবেদন জমা পড়েছিল। এই বিপুল পরিমান আবেদনকারীর প্রায় সকলকেই জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার কাজ সম্পূর্ন করেছে প্রশাসন। আর এই বিপুল কর্মযজ্ঞের নায়ক আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার। এই সব শংসাপত্রেই মহকুমা শাসককে নিজে হাতে সই করতে হয়েছে। কার্যত শংসাপত্রের পাহাড় সই করে সরিয়ে ফেলেছেন মহকুমা শাসক।
এক লক্ষ শংসা পত্রে সই করে করে রেকর্ড করেছেন মহকুমা শাসক। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই হাজারের বেশি শংসাপত্রে সই করেছেন তিনি। শুধু মহকুমা শাসকের সই নয়, পাচজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এইসব শংসাপত্রের আবেদনকারীদের হিয়ারিং, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সহ নানান কাজ করেছেন। তবে মহকুমা শাসকের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত জেগে এই সব শংসাপত্রে সই করছেন মহকুমা শাসক। শংসাপত্রে সই করতে করতে আঙুলে ব্যথাও হয়েছে মহকুমা শাসকের। এই ব্যাথা কমাতে অনেক সময় আঙুল ব্যথার ওষুধও খেয়েছেন মহকুমা শাসক।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুয়ারে সরকারের শিবিরে এত বেশি সংখ্যক জাতিগত শংসাপত্র বিলি রাজ্যের অন্য কোনও জেলা করতে পারেনি। আর আলিপুরদুয়ার জেলায় যেহেতু একটি মাত্র মহকুমা, সেই কারণে জেলার সব শংসাপত্রেই নিয়ম অনুযায়ী মহকুমা শাসককে সই করতে হয়েছে। অনেকের জাতিগত শংসাপত্র না থাকার দরুন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে জাতিগত সুবিধে পেতে অসুবিধে হচ্ছিল। সেই কারণে দ্রুত জাতিগত শংসাপত্র বিলি করেছে প্রশাসন।
অনেকেই দুয়ারে সরকারের শিবিরে আবেদন করে জাতিগত শংসাপত্র পেয়ে তার পর সেই শংসাপত্র দিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আবেদন করেছেন। ফলে শিবির চলতে চলতেই জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার টার্গেট নিয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার বলেন, " রাত দিনের বিষয় নেই। মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য সরকার মানুষের দুয়ারে যাচ্ছে। জাতিগত শংসাপত্র মানুষের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় নথি। এই কাজ ফেলে রাখা যায় না। তাই প্রায় লক্ষাধিক জাতিগত শংসাপত্রে সই করে সেগুলো বিলি করেছি ঠিকই। কিন্তু এই শংসাপত্রের আবেদন গ্রহণ থেকে শুরু করে সার্টিফিকেটের ফাইনাল কপি বের হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে প্রচুর সরকারি কর্মীরা রাতদিন এক করে কাজ করেছেন। এটা ঠিক অন্যান্য কাজের ফাঁকে সইগুলো সব আমাকেই করতে হয়েছে। রাতে দিনে যখন সময় পেয়েছি তখনই তা করেছি। আমার কাছে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।"
আরও পড়ুন- একঘেয়েমি কাটিয়ে অন্য স্বাদের খোঁজ পেতে চান? পুজোয় ঘুরে আসুন পাহাড়ি কমলালেবুর গ্রাম সিটং
আলিপুরদুয়ারে যারা জাতিগত শংসাপত্র পেয়েছেন তাদেরও অনেকে অবাক হয়ে গিয়েছেন এত তাড়াতাড়ি তারা কিভাবে জাতিগত শংসাপত্র পেলেন। আলিপুরদুয়ার পুরসভা এলাকার গোপাল দাস বলেন, " দুয়ারে সরকারের প্রথম শিবিরে আমার স্ত্রীর এসসি সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছি। দ্বিতীয় শিবিরে একেবারে হাতে গরম সার্টিফিকেট পেয়েছেন স্ত্রী। আর ওই দিনই আমার স্ত্রী সেই সার্টিফিকেটের ফোটোকপি দিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছেন। এত তাড়াতাড়ি জাতিগত শংসাপত্র পাব ভাবতেই পারিনি। প্রশাসন খুব ভাল কাজ করেছে।"
Rajkumar Karmakar
আরও পড়ুন- যাত্রা শুরুর জায়গাতেই আজ দাঁড়ায় না টয়ট্রেন, এবার বদলে যাবে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: West bengal