মালদহের ঘটনায় যেভাবে পুলিশ বন্দুকধারী ব্যক্তিকে বাগে এনে পড়ুয়াদের নিরাপদে বের করে এনেছে, তাঁর প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷
আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জে থানায় হামলা পরিকল্পিত, সরাসরি বিজেপি-কে দায়ী করে বিস্ফোরক মমতা
এ দিন মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে ঢুকে পড়ে দেব বল্লভ নামে ওই ব্যক্তি৷ এর পরেই একতলার একটি ক্লাসে গিয়ে পড়ুয়াদের পণবন্দি করে ফেলে অভিযুক্ত৷ পারিবারিক অশান্তির কথা উল্লেখ করে সে দাবি করতে থাকে, বন্দুকের পাশাপাশি তার কাছে আত্মঘাতী বোমাও রয়েছে৷
advertisement
ঘটনার খবর পেয়েই স্কুল ঘিরে ফেলে পুলিশ৷ কিন্তু পুলিশকে কাছে ঘেঁষতে দেখলেই আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ছিল দেব বল্লভ৷ স্কুলের এক শিক্ষিকাকেও সে আগেই হুমকি দেয়, পুলিশ ডাকলে বোমায় উড়িয়ে দেবে ক্লাস৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার আজহারুদ্দিন খানও৷
ততক্ষণে স্কুলে বন্দুকবাজের ঢুকে পড়ার খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে৷ স্কুলের চৌহদ্দিতে ঢুকে পড়েন গ্রামবাসী এবং অভিভাবকরা৷ সন্তানদের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁরা৷ সেই ভিড় সামাল দিতে দিতেই ঠান্ডা মাথায় বন্দুকবাজকে কাবু করার ছক কষে ফেলেন আজহারউদ্দিন৷
আরও পড়ুন: মালদহের স্কুলে বন্দুকবাজের তাণ্ডবে দিল্লির 'চক্রান্ত'! গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন মমতা
যেহেতু ওই বন্দুকধারী পুলিশকে দেখলেই উত্তেজিত হয়ে পড়ছিল, তাই পুলিশের পোশাক ছেড়ে সাধারণ পোশাক পরে নেন তিনি৷ এর পর সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে ওই ক্লাসঘরের দরজার সামনে পৌঁছে যান৷ ওই বন্দুকধারীর কথা, হুমকিতে ততক্ষণে ক্লাসের বেশ কয়েকজন পড়ুয়া আতঙ্কে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছে৷ কেউ বমি করছে, কারও আবার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে৷
প্রথম থেকেই সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন ওই বন্দুকধারী ব্যক্তি৷ তা করতে গিয়ে তিনি একটু অন্যমনস্ক হতেই তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন আজহারউদ্দিন৷ অভিযুক্তের যে হাতে বন্দুক ছিল, সেটা চেপে ধরে উপর দিকে তুলে ধরেন ওই অফিসার৷ জাপ্টে ধরে অভিযুক্তকে মাটিতে ফেলে দেন তিনি৷ সঙ্গে সঙ্গেই ক্লাসে ঢুকে পড়ে অভিযুক্তকে কাবু করে ফেলেন বাকি পুলিশকর্মীরা৷ অভিযুক্তের থেকে উদ্ধার করা হয় বন্দুক, এক জোড়া ছুরি, পেট্রোল বোমা, অ্যাসিডের বোতল৷
যদিও গোটা ঘটনার পর নির্লিপ্তই ছিলেন ঘটনায় নায়ক পুলিশ অফিসার আজহারউদ্দিন৷ তবে দৃশ্যতই স্বস্তি ফিরেছিল তাঁর চোখেমুখে৷ আজহার বলেন, 'আমরা পুলিশ অফিসার৷ এতগুলো বাচ্চার জীবন জড়িয়ে ছিল৷ উপরওয়ালার আশীর্বাদ ছিল, অভিযুক্তকে আমরা গ্রেফতার করেছি৷ এটাই অনেক৷'