আম বলতেই প্রথমেই মনে আসে মালদহের নাম। এরাজ্যে তো বটেই, দেশ-বিদেশে আমের যোগান যায় মালদহের আমের আর বাগান থেকে। কিন্তু, এবার সুখবর নেই মালদহের আম বাগিচায়। আমের চাষ বরাবরই প্রকৃতিনির্ভর। আর এ বার মালদহে আমের ফলনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া। প্রথমত, এবার শীতের লম্বা ইনিংস প্রভাব ফেলেছে আমের মুকুলে। দীর্ঘ ঠান্ডার কারণে অধিকাংশ গাছেই মুকুল এসেছে অনেক দেরিতে এবং তা পরিমাণের চেয়ে বেশ কিছুটা কম। দ্বিতীয়ত মুকুল আসার সময়েই গাছের নতুন পাতা গজিয়ে যাওয়ায় মুকুল ফুটে তা থেকে আমে পরিবর্তন হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম। অর্থাৎ প্রথমেই আমের গুটি এসেছিল কম। সেই আমেরও বেশ কিছু অংশ ঝরে গিয়েছে চলতি সপ্তাহে ঝড় ও আংশিক শিলাবৃষ্টিতে। স্বাভাবিকভাবেই যত দিন যাচ্ছে ততই কমছে মালদহে আমের ফলনের মাত্রা। প্রতি বছরই এই মরশুমে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আমের কিছু ক্ষতি হয়। এখন সেই আশঙ্কাতেই রয়েছেন আম চাষিরা। সব মিলিয়ে আমের উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়ছে মালদহে।
advertisement
আরও পড়ুন : বিনিয়োগের আগে সচেতনতা জরুরি! জানুন ক্রিপ্টোকারেন্সি কীভাবে কাজ করে, কখন আবার করে না!
মালদহে এ বছর আমের চাষ হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনশো হেক্টর আমবাগান বেড়েছে জেলায়। উদ্যানপালন দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, গত বছর মালদহে আম উৎপাদন হয়েছিল তিন লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। এবছর আমের মুকুল ও ফলন দুটোই যথেষ্ট কম। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে প্রথম ঝড় ও আংশিক শিলাবৃষ্টি হয় মালদহের রতুয়া,মানিকচক, গাজোল, ইংরেজবাজার, কালিয়াচক প্রভৃতি ব্লকে। যাতে আমের ফলন আরও সাত থেকে আট শতাংশ কমার সম্ভাবনা। প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর আম বাগানের ফলন ক্ষতি হয়েছে সরকারি হিসেবে। এই অবস্থায় মালদহে এবছর আমের ফলন আড়াই লক্ষ মেট্রিক টনে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা উদ্যান পালন দপ্তরের।
আরও পড়ুন : গাছ, স্কাইস্ক্র্যাপার নাকি জলপ্রপাত? ছবিতে যা দেখছেন, তাতেই বোঝা যাবে আপনার স্বপ্ন
আরও পড়ুন : ভিডিও দেখলে গায়ে কাঁটা দেবে! প্রাণ তুচ্ছ করে সমুদ্রে লাইফগার্ডকে বাঁচান সার্ফার
গত দুই বছর করোনা ভাইরাসের অতিমারির কারণে আমের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয় মালদহে। আর এই বছর ফলনই কমেছে ব্যাপক ভাবে। এই অবস্থায় মাথায় হাত জেলার আম ব্যবসায়ীদের। এর পাশাপাশি বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের মৃল্য। ফলে এবার আমের রফতানির খরচও বাড়ার আশঙ্কা। এই অবস্থায় আমে বিপুল লোকসানের আশঙ্কা করছেন জেলার আম ব্যবসায়ীরা। এমনকি সরকারি ক্ষতিপূরণের দাবিও করছেন তাঁরা।