বিগত পাঁচ বছর ধরে ইংরেজবাজার শহরের বাপুজি কলোনি এলাকার বাসিন্দা কাকিমা মৌমিতা হাসানের বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে অফিস করেছিল ভাইপো সাদ্দাম। ঠিকাদারীর পাশাপাশি জমি কেনা বেচার কাজও করত সে সেখান থেকে।
advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার শহরের বাপুজি কলোনি এলাকার বাসিন্দা কাকিমা মৌমিতা হাসানের বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে অফিস করেছিল ভাইপো সাদ্দাম নাদাব। লেবার সরবরাহের পাশাপাশি জমি জায়গার বেচা কেনার সঙ্গে যুক্ত ছিল সেই যুবক। গত ১৮ মে ইংরেজবাজার শহরের বাপুজী কলোনি এলাকার অফিস থেকে রাতে বাড়ি ফেরার সময় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় সাদ্দাম নাদাব।
সেই সময় তার কাছে ব্যবসার ২৫ লক্ষ টাকা ছিল। এই বিষয়ে ইংরেজবাজার থানায় পুখুরিয়া থেকে এসে তার পরিবারের লোকেরা নিখোঁজের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে সাদ্দামের কাকিমাকে সন্দেহ করে নির্দিষ্ট নাম দিয়ে ২৩ মে আবারও অভিযোগ দায়ের করেন মৃত যুবকের স্ত্রী নাসরিন খাতুন। এরপরই পুলিশ রবিবার সাদ্দামের কাকিমা মৌমিতাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশি জেরায় মৌমিতা স্বীকার করে, সে তার বাবার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে তপনে নিয়ে গিয়ে ভাইপোকে সুপারি কিলারের সাহায্যে খুন করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন এলাকায় মৌমিতার বাবার বাড়ি। সেখানেই তাদের একটি নির্মীয়মান বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেই বাড়িতেই গত ১৮ মে সাদ্দামকে প্রলোভন দিয়ে নিয়ে যায় তার কাকিমা মৌমিতা।
সাদ্দামের সঙ্গে তার কাকিমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল গত পাঁচ বছর ধরে। এরপরই সেখানে সুপারি কিলারের সাহায্য নিয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে সাদ্দামের দেহ টুকরো টুকরো করে খুন করা হয়। সেই দেহের অংশ নির্মীয়মান বাড়ির মেঝেতে পুঁতে দিয়ে তার উপর বালি সিমেন্টের ঢালাই করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পিছনে তিন থেকে চারজন দুষ্কৃতীর সাহায্য নিয়েছে ধৃত ওই মহিলা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সোমবার তপন এলাকা থেকেই মৃত ওই ঠিকাদারের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মোটা টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করেই কাকিমার সঙ্গে গোলমাল চলছিল ভাইপো সাদ্দামের। তার জেরে এই খুনের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। গ্রেফতারের পর আদালতে যাওয়ার পথে ধৃত মৌমিতা হাসান জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। শারীরিকভাবে নির্যাতন করত সাদ্দাম। তার স্বামী ও নাবালক সন্তানকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। পথের কাঁটা দূর করতে এভাবেই খুন করেছে সে। এদিকে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহ জেলার পুখুরিয়া থানা এলাকায়। অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যরা।
—-জিএম মোমিন।