একইভাবে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং যেন জলদাপাড়াকে ছাপিয়ে নিজেই নিজের রূপ সৌন্দর্যে অনন্য। যেন হলংয়ের নামেই পরিচয় পায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। অথচ সেই হলং এখন বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত। হলংয়ের গর্বের কারণ ছিল মূলত ৪টি।
advertisement
প্রথমত, ঐতিহাসিক কাঠের দোতলা হলং বাংলো।
দ্বিতীয়ত, কাঠের হলং সেতু।
তৃতীয়ত, বাংলোর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হলং নদী ও তার অন্যপাশে বন্য প্রাণীদের খাবার দেওয়ার সল্ট পিট। সেখানে নিয়মিত বন্য প্রাণীদের আনাগোনা লেগেই থাকত।
চতুর্থ, বনের মাঝে হলংয়ের অদ্ভুত সুন্দর নিস্তব্ধতা।
কিন্তু সখের সেই বনবাংলো ও কাঠের হলং সেতু হারিয়ে হলং এখন নিঃস্ব। গত বছর ১৮ জুন রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং বনবাংলো। পরে তদন্তে জানা যায়, ৮ কামড়ার এই বনবাংলোর তিন তলায় ৩ নম্বর ঘরে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে গোটা বাংলো পুড়ে গিয়েছে। ১৯৬৭ সালে নির্মিত কাঠের এই বনবাংলোকে রাজ্য পর্যটনের ‘কোহিনূর’ বলেন অনেকে।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের দুর্যোগে ভেঙেচুরে যায় কাঠের হলং সেতুটিও। ৫ অক্টোবর রবিবার হলং নদীর জলের স্রোতে ভেঙে যায় সুন্দর কাঠের তৈরি হলং সেতু। হলং বাংলোর সেই জায়গাটি এখন খাঁ খাঁ করছে। ঘাসে ঢাকা পড়েছে বাংলোর স্থান। দেখলে বোঝার উপায় নেই এখানেই একসময়ে কত মানুষের প্রেম, ভালবাসা, বিরহ-সহ নানা স্মৃতি বিজরিত কাঠের তিন তলা হলং বনবাংলো দাঁড়িয়ে ছিল।
হলং সেতুর ওপারে জলদাপাড়ার একমাত্র সরকারি ট্যুরিস্ট লজ- ‘অরণ্য’। সেতু ভাঙায় সেখানে যাতায়াত বন্ধ। সাফারির টিকিট কাউন্টারও বন্ধ।