দু’বছর আগে কলকাতার রাস্তায় ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতেন তিনি। একদিন সমাজকর্মী তথা পুলিশ কর্মী বাপন দাসের নজরে আসেন। সেই সময় বাপনবাবু ঝর্ণার গান ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেই তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি পৌঁছে যায় রায়গঞ্জে তার ছোট ছেলের কাছে, যে সাত বছর ধরে খুঁজছিল মকে। সমাজকর্মীর সহায়তায় অবশেষে মা–ছেলের পুনর্মিলন হয়, আর কেঁদে ভাসিয়েছিল দু’জনেই। ঝর্ণা তখন জানিয়েছিলেন— স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। প্রথমে বান্ধবীর বাড়িতে কিছুদিন, তারপর পায়ের ব্যথা সারিয়ে চলে আসেন কলকাতায়। প্রথমে ভেবেছিলেন একটু ঘুরবেন, দক্ষিণেশ্বর ও শহরের পুরনো জায়গাগুলো দেখবেন। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তার পথ বদলে দেয়। পেটের দায়ে রাস্তায় বোতল–কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করতে শুরু করেন, আর সেই ফাঁকে গেয়ে যেতেন নিজের মনের কথা। গানই ছিল তার সঙ্গী, তার আশ্রয়।
advertisement
তবে দু’বছর পর নিয়তির ফের খেলা। ফের দেখা যাচ্ছে ঝর্ণা পালকে — এবার নিজের শহর রায়গঞ্জেই। শিলিগুড়ি মোড়, বাসস্ট্যান্ড, বাজার — সর্বত্রই আবার সেই চেনা দৃশ্য, এক হাতে বোতল, অন্য হাতে জীবনের সুর। এখন তার গান শুনে অনেকেই তাকে হাতে টাকা গুঁজে দিচ্ছে, কেউ বা ভাল-মন্দ রেস্টুরেন্ট কিংবা হোটেলে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে। কেউ ভিডিও করছে, কেউ আবার তার গলা শুনে মুগ্ধ হয়ে হাসছে।
আরও পড়ুন-নভেম্বরেই ‘জ্যাকপট’…! সূর্যের গোচরে আকাশছোঁয়া উন্নতি, বিরাট আর্থিক লাভ, সৌভাগ্যের দরজা খুলবে
তবু প্রশ্ন রয়ে যায় — কেন ফের রাস্তায় নামলেন ঝর্ণা পাল? তার পরিবার কোথায়? বড় ছেলে-মেয়ে কেউ কি খবর রাখে না? এই প্রশ্নের উত্তরে ঝর্ণা বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। পেটের দায়ে আবার গাই, কুড়িয়ে খাই।’ এখন ঝর্ণা পালের গান আবার ভাইরাল। ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম — সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে তার সুর। জীবনের তীব্র কষ্টের মধ্যেও তার কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে এক অদ্ভুত সুর — অভিমান, সংগ্রাম, আর জীবনের প্রতি এক অদম্য ভালবাসার সুর।





