সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন বছর ৩০-এর নারায়ণ ঠাই। পরিবার জানায়, মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। পারিবারিক অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। রাতভর খোঁজ চলার পর মঙ্গলবার সকালে শোনা যায়, পঞ্চায়েত অফিসের ভেতরে একটি দেহ পড়ে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ হু হু করে বাড়ছে সবজি, তেল, মাংস, রসুনের দাম, মাথায় হাত মধ্যবিত্তের !
advertisement
সকালে বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস খুলেতেই একে একে কর্মীরা আসেন। এমনকি পঞ্চায়েত প্রধানও উপস্থিত ছিলেন। অথচ কারুর নজর পড়ল না ওই নিথর দেহটির দিকে। কিংবা পড়লেও, গুরুত্ব দেয়নি কেউ। পুলিশে খবর দেওয়া তো দূরস্ত, পঞ্চায়েত অফিস চলতে থাকে স্বাভাবিক ছন্দেই।
অবশেষে বিকেলের দিকে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য নরেশ রায় ঘটনাটি সামনে আনেন। তখনই শুরু হয় তৎপরতা। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় মৃতদেহ। কিন্তু ততক্ষণে যা ঘটেছে, তা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, অমানবিকতার চরম উদাহরণ।
আরও পড়ুনঃ ডিম-মাংসেই রোজগারের রসদ! আত্মবিশ্বাসে ভরপুর পাটকাটা কলোনি
তবে কীভাবে মৃতদেহটি পঞ্চায়েত অফিসের ঘরে এল, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর নিয়ে আসা হয় ধূপগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে পরে দেহটি নিয়ে যাওয়া হয় ধূপগুড়ি থানাতে। বুধবার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ জানার জন্য তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে তীব্র প্রশ্ন। এমন ঘটনা কীভাবে ঘটে গেল তাঁদের নাকের ডগায়? কেন একবারও খবর দেওয়া হয়নি প্রশাসনকে? কেন মৃতদেহের পাশে দাঁড়ানোর মানবিক উদ্যোগ পর্যন্ত দেখা যায়নি? বারঘরিয়ার এই ঘটনার পরে গোটা এলাকা জুড়ে ক্ষোভ ও শোকের ছায়া।
এলাকার সিপিএম নেতা রাজকুমার রায় বলেন , “এই দৃশ্য আমরা কোনও দিন ভুলব না। মৃত্যু যেমন নিশ্চিত, তেমনই মানবিকতা যে আজ মৃত, সেটাও স্পষ্ট হয়ে গেল!”
মৃত যুবকের দাদা নির্মল ঠাই বলেন,”সোমবার সন্ধ্যাবেলা ভাই আত্মীয়র বাড়ি যাবে বলে টাকা চায়। তাকে মানা করা হয়। তাই নিয়েই রাগারাগি করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। দুপুর নাগাদ আমরা শুনতে পাই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এক যুবক মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আমরা গিয়ে দেখি আমার ভাই।”
এই বিষয়ে বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান আবু তাহেরকে ফোন করা হলে তিনি জানান,”পুলিশকে জানানো হয়েছিল। পরিবার মৃতদেহ নিয়ে যেতে তালবাহানা করে। সেই কারণে দীর্ঘ সময় ধরে ওই চত্বরেই পড়ে ছিল। “