কড়া পুলিশি প্রহরায় পরীক্ষা দিল মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের শোভানগর হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সিদ্দিকা খাতুন। প্রথম পরীক্ষা শেষে সিদ্দিকা জানায় ভাল হয়েছে পরীক্ষা। মালদহ ইংরেজবাজার ব্লকের শোভানগর চন্ডীপুরের বাসিন্দা সিদ্দিকা এবার শোভানগর হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। পরিবারের লোকেরা তার বিয়ে দেয় দেড় বছর আগে। ২ মার্চ মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয় সিদ্দিকা খাতুন। পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। তবে জন্মের পর পুত্র সন্তানের ওজন কম থাকায় চিকিৎসকেরা সদ্যোজাতকে পেডিয়াট্রিক কেয়ার ইউনিট রেখেছে। হাসপাতালের বেডে রয়েছেন সিদ্দিকা খাতুন। বর্তমানে সিদ্দিকার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। পরীক্ষার প্রস্তুতি ও শুরু করেছিল সিদ্দিকা। হাসপাতালের বেডে শুধু শুধু বসে রয়েছে তাই পরিবারের সাহায্যে ও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাহায্য নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
advertisement
আরও পড়ুন - International Women's Day: অলিম্পিক্সের মঞ্চে বারবার দেশকে সম্মান এনে দিয়েছেন ভারতের ‘এই’ মেয়েরা, কুর্নিশ
তারপরেই জেলা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষার্থীর আত্মীয় সাহানার বিবি বলেন, আমরা খুব খুশি মেয়ে পরীক্ষা দিতে পারায়। আমার ভাইঝি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছে হাসপাতালে। পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল, আমরা স্কুলে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করি।অপরদিকে, কয়েক ঘন্টার সদ্যোজাত সন্তানকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিল আরও এক সদ্য হওয়া মা।
আরও পড়ুন - IPL 2022: আইপিএল শুরুর আগেই নেটে শুরু ধোনি ধামাকা, ছক্কার ফুলঝুরির ভাইরাল ভিডিও
মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পরীক্ষার্থী। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার নানারাই গ্রামের বাসিন্দা আনজারা খাতুন(১৮)। হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। গ্রামের যুবক মোহাম্মদ সেলিমের সঙ্গে তিন বছর আগে প্রেম করে তারা বিয়েও করে। সেই বিয়ে মেনে নেয় আনজারার বাবা আমির হোসেন। কিন্তু বিয়ের পরেও পড়াশোনা বন্ধ করেনি আনজারা। দশম শ্রেণীতে সন্তান সম্ভবা হলেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডাক্তারেরর পক্ষ থেকে তার সন্তান প্রসবের সময় দেওয়া হয়েছিল ১৬তারিখ। কিন্তু আজ পরীক্ষার দিন সকালেই অসহ্য প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয় সে। সকাল সাতটায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। তার পরেই কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা দিতে বসে যায়।পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলে। আনজারার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশি পাহারায় চলছে তার পরীক্ষা। আজ প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা। পরীক্ষাতে ভালো ফলাফল করার ব্যাপারেও আশাবাদী সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের মা আনজারা। আনজারা খাতুন বলেন, আজ সকালেই আমার কন্যা সন্তান হয়েছে।কিন্তু আজকেই আমাদের পরীক্ষা শুরু। পরীক্ষা তো দিতেই হবে। হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষায় ভাল দিলাম।হরিশ্চন্দ্রপুরের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভেন্দু ভক্ত বলেন, আমাদের হাসপাতালের একজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ভর্তি ছিল। আজ সকালে সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। তার পরেও সে হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিতে চেয়েছে। আমরা সমস্ত রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সুষ্ঠ ভাবে পরীক্ষা দিয়েছে।
Harashit Singha
