তবে রাজ আমল এখন ইতিহাস, কিন্তু রাজা আমলের ঐতিহ্য বজায় রাখতে কোন প্রকারের অবহেলা করেনি দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। মদনমোহন বাড়ির সমস্ত পূজোর নিয়ম-নীতি থেকে শুরু করে সমস্ত বিষয়ে রাজ আমলের সবেকিয়ানার ছোঁয়া রয়েছে সবত্র। মদনমোহন বাড়িতে রয়েছে রাজ আমলের তৈরি নহবৎখানা। যেখানে রাজ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সকালে এবং সন্ধ্যায় দুই সময়েই সানাই বাজানো হয়। এই সানাইয়ের সুরে সকালে ঘুম ভাঙে মদনমোহন ঠাকুরের এবং সন্ধ্যার সময় করা হয় সন্ধ্যা আরতি।
advertisement
আরও পড়ুন - বর্ষার মরশুম আসতেই উত্তরবঙ্গে বাড়ছে নদিয়ালী মাছের চাহিদা, খুশি মৎস্য ব্যবসায়ীরা
মদনমোহন বাড়িতে আসা এক দর্শনার্থীরা বলেন, “সকালে ও সন্ধ্যের সময় মদনমোহন বাড়ির এই সানাইয়ের সুর শুনতে খুবই ভালো লাগে। এখানে এসে এই সানাইয়ের সুর শুনলে মনটা ভরে যায়।”
প্রসঙ্গত বলতেই হয় এখন পর্যন্ত এই সানাইয়ের সুর কোন রকম রেকর্ডিং দ্বারা বাজানো হয় না, এই সানাই বাজানোর দায়িত্বে রয়েছেন দুজন সানাই বাদক। যাদের কে নিয়োগ করা হয়েছে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের পক্ষ থেকে, এবং এই সানাই বাদকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে রয়েছে কোচবিহার জেলা তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর। মূলত কোচবিহার জেলার তথ্য সংস্কৃতি দফতর এর আওতায় যে সমস্ত সানাই বাদকেরা রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকেই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সানাই বাদকদের নিযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন - পশু খাদ্যের আড়ালে পাচার হচ্ছিল বিপুল মাদক! যার দাম শুনলে চমকে যাবেন
রাজা আমলে মদনমোহন বাড়িতে সানাই বাজানো উদ্দেশ্যে বেনারস থেকে সানাই বাদকদের নিয়ে আস হত। কিন্তু, রাজ আমলের পরবর্তী সময়ে বেনারস থেকে সানাই বাদকদের আর নিয়ে আসা আর সম্ভব হয়নি। তবে রাজ আমলের সেই রীতি অক্ষুন্ন রাখতেই বেনারসের সানাই বাদকদের পরিপূরক হিসেবে কোচবিহার জেলা থেকে সানাই বাদকদের নিযুক্ত করা হয়েছে এই সানাই বাজানোর কাজে।
মদনমোহন বাড়ির নহবৎখানায় এই সানাই বাজানোর বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার সদর মহকুমার শাসক রাকিবুল রহমান জানান, “মদনমোহন বাড়ির নহবৎখানায় রাজ আমলের ঐতিহ্য মেনেই এখনো পর্যন্ত সানাই বদকদের দ্বারাই সানাই বাজানো হচ্ছে। কোনরকম রেকর্ডিং করা সানাইয়ের সুর বাজানো হচ্ছে না। বর্তমানে এই সানাই বাজানোর কাজে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের পক্ষ থেকে দুজন ব্যক্তিকে নিযুক্ত করা আছে। তারা যথাসময়ে এই সানাই বাঁচানোর কাজটি করে থাকেন।”
সার্থক পন্ডিত