মুখে মঙ্গোলীয় জনজাতির ছোঁয়া, সাজে গ্রামীণ সরলতার আভা। সোনার গহনার চাকচিক্য নেই, দেবী সেজেছেন একেবারে ঘরের মেয়ে হয়ে। ময়নাগুড়ির আমগুড়ি বাজার সংলগ্ন বসুনিয়া পরিবারের দাবি এই পূজা প্রায় ২০০ বছরের উপরে পুরনো। রাজবংশী সমাজে দুর্গা পরিচিত ‘দেবী ঠাকুরানি’ নামে, আর আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও সেই নামেই আজও পূজিতা তিনি।
advertisement
পরিবারের কর্তার নির্দেশে প্রতিমা তৈরিতে বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন শিল্পীরা। বর্ণ রক্তিম, সাধারণ পাটানি শাড়ি, চোখ-নাক-মুখে যেন তিস্তাপাড়ের গৃহবধূ। মৃৎশিল্পীর কথায় “এক চুল এদিক-ওদিক হলেই আবার নতুন করে গড়তে হচ্ছে। কারণ এ দেবী সবার কাছে ঘরের মেয়ে।” কিন্তু কেন এই রূপে পূজিতা হন দেবী?
স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, জনশ্রুতি অনুযায়ী, একসময় ময়নাগুড়ি ছিল জঙ্গলে ঘেরা, চাষবাসই ছিল একমাত্র ভরসা। তাই ঘরের মেয়ে ভেবে বরণ করার আবেগ থেকেই এমন পুজো। একইসঙ্গে এই পুজা কেবল পারিবারিক নয়, স্থানীয় মানুষেরও। আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ ভিড় জমান ঠাকুরানির দর্শনে। পুজো শেষে ভোগের থালায় ভাগ বসে সবার।
সময়ের পালাবদলে অনেক কিছুই বদলেছে। কিন্তু তিস্তাপাড়ের এই বসুনিয়া বাড়িতে এখনও পূজিত হন দেবী দুর্গা গৃহস্থের গৃহবধূ রূপে, মানুষের মনে এক অনাড়ম্বর ভালবাসার প্রতিচ্ছবি হয়ে! এখানে লাঙ্গল চাষের পরেই চাষাবাদ শুরু হয় গোটা গ্রামে এবং ভালো ফসল হয় গোটা গ্রামে আড়াই লাঙ্গলের শেষ চাষ দেখা যাত্রার সময়।