পুজোর মরশুমে ২৫ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত জয় রাইডে যাত্রী হয়েছে ৫৭৪৪। এই যাত্রীদের থেকে টিকিট বিক্রি বাবদ আয় ৬৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা। এই টাকা এসেছে দার্জিলিং থেকে ঘুম অবধি জয় রাইড চালিয়ে।
আরও পড়ুন– বইছে উত্তুরে হাওয়া, তাপমাত্রা কমবে ধীরে ধীরে, রাজ্যে কোথায় কতটা পারদ পতন? জেনে নিন
advertisement
প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত একাধিক জায়গায় লাইন ক্ষতিগ্রস্ত। এই লাইন যথাযথ করতে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল বারবার কথা বলছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিছু অংশে টয় ট্রেনের জন্য ট্রায়াল রান শুরু হয়েছে। তবে কেউ (উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল) নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কবে এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত চলবে টয় ট্রেন।
এর আগেও একাধিকবার দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের হেরিটেজ তকমা হারানোর অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই হেরিটেজ তকমা রক্ষা করে ছিলেন। এবার পাহাড় সফরেও সেই প্রসঙ্গের কথা তিনি তুলে আনেন।
যে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেতে দেশগুলোর কালঘাম ছুটে যায়, সেই হেরিটেজ তকমা খোয়াতে পারে টয় ট্রেন। ১৪৫ বছর পুরনো দেশের এই ঐতিহ্যকে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালে এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের কাছে এই নিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে ইউনেস্কো জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টয়ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কোনও তথ্যই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটিকে দেয়নি ভারতীয় রেল।
ক্রমাগত ধস ও পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের আন্দোলনের ফলে মাঝেমধ্যেই ট্রয় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায় এবং সেই লাইনকে সারিয়ে, টয় ট্রেনকে পুনরায় চালাতে যথেষ্টই বেগ পেতে হচ্ছে ভারতীয় রেলকে। ইতিমধ্যেই ইউনেস্কো এক প্রতিনিধিদলকে পাঠিয়ে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে বলে খবর। এরপর ভারতীয় রেলের কাছে এইডিএইচআর বা দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের মুকুটে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা ধরে রাখা এখন চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও ভারতীয় রেল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।
১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে দার্জিলিংয়ের টয় ট্রেনকে হেরিটেজ তকমা দেয় ইউনেস্কো। তারপর থেকে নানা কারণে প্রশ্নের মুখে পড়েছে টয় ট্রেন পরিষেবা। ধস, বিক্ষোভ; যে কোনও সমস্যায় আটকে যায় টয় ট্রেন। এই নিয়ে আগেও একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইউনেস্কো। এদিকে উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের বক্তব্য, টয়ট্রেনের লাইনের উপর আবর্জনা ফেলে সেটি নোংরা করে মানুষ। মাঝে মধ্যে লাইনের উপর বসে আড্ডা দেয় তারা। গাড়িও পার্ক করে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টয়ট্রেনের লাইন। তবে হেরিটেজ তকমা ধরে রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তারা ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলবে বলেও জানিয়েছে উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানিয়েছেন, হেরিটেজ রক্ষা করতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ৷ পাশাপাশি এনজেপি থেকে দার্জিলিং, পুরো পথেই টয় ট্রেন পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ৷ আশা করা যায় শীঘ্রই এটি চালু হয়ে যাবে।