সকলের কাছেই এটি একটি পবিত্র ধর্মীয় স্থান। দার্জিলিং গেলে এই মহাকাল মন্দির না দর্শন করলে যেন ঘোরা সম্পূর্ণ হয় না।
এই মন্দিরের মূল ঐতিহ্য হল এখানে শিব ও বুদ্ধ একইসঙ্গে পূজিত হন। প্রসঙ্গত, ১৭৬৫ দোর্জে রিনজিং নামে একজন লামা এই মঠটি তৈরি করেছিলেন। অনেকের মতে তাঁর নাম অনুসারে এই জায়গার নাম হয়েছে দার্জিলিং। অনেকেই আবার মনে করে তিব্বতি শব্দ “দর্জি” অর্থাৎ বজ্র এবং লিং অর্থাৎ “ঝড়”।
advertisement
এই মন্দিরকে ঘিরে বহু পৌরাণিক কথা প্রচলিত রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে এই জায়গায় দাঁড়িয়েই দেখা যেত পুরো দার্জিলিং শহরকে, এখান থেকে এই দেখা যেত বরফের চাদরে মোড়া অপরূপ সুন্দর কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। অবজারভেটরি হিলের এই রাস্তা দিয়ে যাবার সময় কখনও মেঘেদের আনাগোনা কখনও আবার রোদের ঝলকানি বর্তমানে এই জায়গায় তৈরি হয়েছে ভিউ পয়েন্ট যেখানে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা দুচোখ ভরে কাঞ্চনজঙ্ঘা উপভোগ করেন। এই রাস্তা ধরে যাওয়ার পথেই হাতের বাঁদিকে উঠে যায় কয়েকটি সিঁড়ি তারপরেই আঁকাবাঁকা সরু পাহাড়ি পথ ধরে কিছুটা উপরেই উঠতে একটা বিশালাকার গেট এবং চারিদিকে সারি সারি রংবেরঙের বৌদ্ধ ধর্মের পতাকা আর পাইন বন।
এই জায়গায় বসে কিছুটা সময় কাটালেই মনের যেন সমস্ত ক্লান্তি নিমেষেই দূর হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে এ মন্দির কমিটির সদস্য বিকেন লামা বলেন, এই মন্দিরের বিশেষ ঐতিহ্য হল একই প্রাঙ্গণে একই ছাদের তলায় রয়েছে শিব এবং বুদ্ধের স্তুপ একই ঘরে হিন্দু ব্রাহ্মণ এবং বৌদ্ধ সাধু বসে পুজো করেন। এই মন্দিরে আসলেই সকলের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রতি বছর নতুন বছরের প্রথম দিনে সকলের শান্তির কামনায় মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়।
আপনি যদি দার্জিলিং গিয়ে থাকেন অথচ এখনও মহাকাল মন্দিরের দর্শন করেননি তাহলে বড় মিস করছেন। পাহাড়ের কোলে শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে চারিদিকে সবুজে ঘেরা গাছপালা আর রংবেরঙের পতাকা দিয়ে সুসজ্জিত এই মহাকাল মন্দির। এই মন্দিরে শুধু শিব নয় রয়েছে মা কালী দুর্গা হনুমান থেকে শুরু করে আরও দেবদেবীর স্থান। আপনি যদি শীতের ছুটিতে দার্জিলিং যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসুন দার্জিলিংয়ের বুকে বহু চর্চিত এই মহাকাল মন্দির থেকে।
সুজয় ঘোষ