হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অস্তিত্ব সংকটে উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহলে। জীবিকা হারাতে চলেছেন প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ।এরপর বিকল্প কোন পথে তাঁরা হাঁটবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ রক্ষায় পর পর সুপ্রিম ও হাইকোর্টের রায় নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহলে। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা একটি মামলার পরিপেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর অবৈধ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
advertisement
পাশাপাশি সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে টিএন গোদাবর্মন নামের এক ব্যক্তির করা জনস্বার্থ মামলার রায়ে বন্যপ্রাণী অধ্যুষিত অভয়ারণ্যের ধারে কাছে খনি, কারখানা এবং যেকোনও প্রকার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে দেশের সব অভয়ারণ্য,জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন কমপক্ষে এক কিলোমিটার এলাকা ইকো সেনিসিটিভ জোন হিসেবে মেনে চলতে হবে।
হোটেল, হোমস্টে রিসোর্ট এবং কার সাফারির উপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করেন উত্তরবঙ্গের প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ। আর পরোক্ষভাবে উপার্জনকারীরা রয়েছেন প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি। পরিবেশ আদালত এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কার্যত দিশেহারা উত্তরবঙ্গের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা। বিকল্প কোনও রাস্তা দেখছেন না তাঁরা।
জানা যায়, ১৮৯০ সাল থেকেই জয়ন্তীতে মানুষ বসবাস করেন তখন কোন টাইগার রিজার্ভ ছিল না। যখন হোমস্টে গুলি একে একে করে গড়ে উঠেছে মানুষ তাদের জীবিকা খুঁজে পেয়েছে। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের কথায় তখন কেন বন্ধ করা হয়নি হোম স্টে,হোটেল তৈরির কাজ। আজ কেন এভাবে সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে তাদের জীবিকাকে। যদিও পর্যটন বিশেষজ্ঞরা সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নিচ্ছেন। তাঁরা এই রায় অবমাননা করছেন না।পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন আদালতের কাছে এতগুলো মানুষের জীবিকা ভবিষ্যৎ কি হবে তা জানানোর আবেদন করা হবে। এই হোম স্টে গুলো ভেঙে দিলে কী ভাবে রোজগার হবে এখানকার মানুষের? পর্যটকরাই বা কোথায় গিয়ে থাকবেন? জয়ন্তী নদীর ধারে যে মনোরম দৃশ্য পর্যটকরা এতদিন উপভোগ করে এসেছেন তা এবার শেষ হতে চলেছে!
আরও পড়ুন: 'পরীক্ষায় পাশ করেও, চাকরি পেলাম না'! তন্ময় এখন 'এমএ পাশ লটারিওয়ালা'!
জয়ন্তী নদীর গভীরতা কমেছে অনেকটাই। তার জন্য অনেকটা দায়ী মানুষই! ময়লা থেকে বোতল, প্লাস্টিক এসব পরোক্ষভাবে অনেকটাই দায়ী। এতে স্বাভাবিক ছন্দ হারাচ্ছে এ কথা ঠিক! কিন্তু এখানকার হোম স্টে গুলোই একমাত্র ভরসা! এর ওপর নির্ভর করে রয়েছে হাজার হাজার মানুষের জীবিকা! বহু পর্যটক নিরিবিলি আনন্দের খোঁজে এখানে যান। বর্ষাকালে জয়ন্তী নদী জলে ভরে যায়। সে সময় পারাপার বন্ধ থাকে। সীমান্তের এই স্বর্গ রাজ্য তবে কি এবার চিরতরে হারাতে চলেছে? এর বিকল্প পথ কী? উত্তরের আশায় রয়েছেন বহু মানুষ!