আরও পড়ুন: বাবার মুহূর্তের অসতর্কতার মাশুল, ট্রাক্টরের ফলায় ছিন্নভিন্ন ছেলে!
জলপাইগুড়ি শহরের শিরিষতলার সাধুপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুভদ্রা নন্দী। এই প্রতিবন্ধকতাকে জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে কখনও জিততে দেননি। শুধুমাত্র দুটো অন্ন সংস্থানের জন্য নিজের জীবনের কঠিনতম অবস্থায় থেকেও এক কঠিন কাজ বেছে নিয়েছেন তিনি। পা দিয়েই সেদ্ধ সুপারি ছুলে রোজগার করেন তিনি। হাত দিয়েও অনেকে যে কাজ করতে ভয় পান তা ছোট দুটি পায়ের সাহায্যে অনায়াসে করে চলেছেন সুভদ্রা।
advertisement
জামা পরিয়ে দেওয়া এবং চুল বেঁধে দেওয়া ছাড়া বাকি সব কাজই সুভদ্রা একা হাতেই করেন।কাউকে কপালে হাত দিতে দেন না। ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে টিপ ধরে দুই ভ্রুর মধ্যখানে বসিয়ে দেন নিজেই। মুখে ক্রিমও মাখেন দু’পায়ের আঙুল দিয়ে। পায়ের আঙুলে চামচ ধরে ভাত মুখে তোলেন সুভদ্রা। পা দিয়েই বিছানা পাতেন। ঘর সাফ করতেও সাহায্য নেন না কারও। একদিকে মাথা বেঁকিয়ে কাঁধের সঙ্গে ঝাড়ু চেপে ধরে ঘর ঝাড় দেন। পা দিয়ে লিখেই সুভদ্রা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। সংসারের আর্থিক অনটনে পড়াশোনা আর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। কিন্তু তাতে থেমে থাকতে নারাজ তিনি। অনেক কাজ খুঁজে শেষে সুপারি ছুলে উপার্জন করছেন।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
সুভদ্রার জীবন কাহিনী সিনেমার প্রেক্ষাপটকেও হার মানাবে। বিশেষভাবে সক্ষম এই যুবতীর মনোবল রীতিমত চমকে দেওয়ার মত। কর্মস্থলে এসে প্রতিদিন ৯-১০ হাজার সুপারির খোসা ছাড়াতে হয় তাঁকে। সামান্য কিছু রোজগারের জন্য দিনভর এভাবেই কাজ করে চলেছেন সুভদ্রা। বছর ৩৫-এর এই তরুণী সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে শুধুমাত্র এক হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা পান। যা দিয়ে সংসার চালানো বড়ই কঠিন। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা। তাই পেটের দায়ে এই জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন সুভদ্রা। তিনি সরকারি সাহায্যেরও আবেদন জানান। সুভদ্রার কথায়, প্রতিবারই পা দিয়ে ভোট দিয়ে আসেন তিনি।আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন। সুভদ্রার দিদি জোৎস্না ব্রহ্মও সমান তালে বোনকে সাহায্য করেন। সুভ্রদ্রার চোখে স্বপ্ন অনেক, সেই স্বপ্নকে স্বাকার দিতেই লড়ে যাচ্ছেন তিনি। এভাবেই হাজারও সুভদ্রার অনুপ্রেরণা হয়ে লড়ছেন জলপাইগুড়ির এই মেয়ে।
সুরজিৎ দে