তুফানগঞ্জের মফিজুল বা সুমনরা হরিয়ানায় নতুন ছিলেন না। অধিকাংশগ সপরিবার সেখানে প্রায় ৮-১০ বছর ধরে কাজ করতেন। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাভাষি হওয়ার দরুন স্রেফ সন্দেহের বসে তাঁদের উপর নেমে আসে নির্মম অত্যাচার। তাঁদের অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে ধরে নিয়ে যাচ্ছে হরিয়ানার পুলিশ। থানা থেকে ছাড়া পেতে মোটা টাকা দিতে হচ্ছে পুলিসকে। এই অবস্থায় কার্যত প্রাণ বাঁচাতে কাজ ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: মুরগির খামার থেকে দূষণের আশঙ্কায় রাজ্য সড়ক অবরোধ, তুমুল বিক্ষোভ
তবে ফিরে এলেও পেটের দায়ে তাঁরা আবারও ফিরতে চান পুরনো কর্মক্ষেত্রে। তুফানগঞ্জ থানার অন্তর্গত নাককাটি গাছ, বালাভূত, দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত দেড়-দুশো পরিবার এক দশকেরও বেশি সময় ধরে হরিয়ানার গুরুগ্রামে থাকছেন। সেখানে টিনের ঝুপড়ি বানিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের হিসেবে কাজ করতেন সকলে। মহিলারা কেউ গৃহ পরিচারিকা, কেউ রান্নার কাজে যুক্ত থাকতেন। পুরুষরা নির্মাণ শ্রমিক অন্যান্য নানান পেশায় ছিলেন।
তবে সম্প্রতি বাংলা ভাষা ও বাঙালি নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে হরিয়ানা সহ উত্তর ভারতের বেশ কিছু রাজ্য। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বারবার বাঙালি শ্রমিকদের নিশানা করে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি।
আরও পড়ুন: এখন থেকেই ভোট বয়কটের ডাক! কারা দিল জানেন? কারণ জানলে আরও চমকে উঠবেন
প্রাণ হাতে নিয়ে হরিয়ানা থেকে পালিয়ে আসা এই পরিচয় শ্রমিকদের অভিযোগ, যখন-তখন হানা দিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে পুলিশ তাঁদের উঠিয়ে নিয়ে যেত। তারপর চলত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। পুলিশি ধরপাকড় ও অত্যাচারের আতঙ্কে শেষ পর্যন্ত আর থাকতে না পেরে ফিরে আসতে বাধ্য হন তুফানগঞ্জের শ্রমিকরা। সেখানে অত্যাচারের মুখোমুখি হওয়ার আতঙ্ক এবং ভবিষ্যতে কীভাবে চলবে সেই আশঙ্কা মিলিয়ে বেশ বিধ্বস্ত সকলেই।