পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এখন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে মোট ২৪৪ টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আরও কিছু রয়্যাল বেঙ্গলে ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়বে বলে আশা করছেন বক্সা বাঘ বন কতৃপক্ষ। এদিন বক্সা বাঘ বনের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, 'নতুন করে আমরা ২৪ টি ক্যামেরা কিনেছি। এই মুহুর্তে আমাদের ২৪৪ টা ক্যামেরা রয়েছে। আমরা আশা করছি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আরও ছবি পাওয়া যেতে পারে। নতুন পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে।' এদিকে শুক্রবার থেকে সাফারি খুলতেই বক্সা বাঘ বনে পর্যটকরা হুমরি খেয়ে পড়েছেন। বাঘ দেখতে শুধু কলকাতা বা দক্ষিনবঙ্গ থেকে পর্যটকরা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ভিড় করছেন না, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহার থেকেও প্রচুর পর্যটক বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ভিড় জমাচ্ছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের লোকালয়ে ভালুকের পায়ের ছাপ, রাত থেকে আতঙ্ক ধূপগুড়িতে!
কলকাতা থেকে শিবপ্রসাদ চক্রবর্তী, সুজাতা সেনরা এদিনই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে এসে পৌঁছেছেন। এদিন এসেই বক্সা বাঘ বনে জঙ্গল সাফারি করার জন্য উৎসুক হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এদিন তাঁরা জঙ্গল সাফারির সুযোগও পেয়ে যান। তবে বাঘ না দেখতে পেলেও বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছেন তাঁরা। জয়ন্তী এলাকায় বালা নদীর চরে রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছেন তাঁরা। এদিন সুজাতা সেন বলেন, “আমরা জেনেছি বক্সা বাঘ বনে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়েছে। তা শোনার পরেই বক্সায় আসার জন্য মনটা আনচান করছিল। এসে দেখলাম জঙ্গল সাফারি চালু হয়ে গেছে। আমরা বাঘ সরাসরি দেখতে পাইনি ঠিকই কিন্তু বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছি। আর তা ছাড়া আমরা জঙ্গল খুব ভালোবাসি। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল খুব ভালো। এখানকার নিস্তবদ্ধতা আমাদের বরাবর খুব টানে। আমরা খুব খুশি।'
আরও পড়ুন: বক্সায় ৫ দিন পর চালু হচ্ছে জঙ্গল সাফারি, দর্শন মিলতেই পারে রয়্যাল বেঙ্গলের!
বক্সা বাঘ বন ঘোরার আনন্দ এদিন চেপে রাখতে পারেননি জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থেকে আশা বুম্বা রায়। তিনি বলেন, 'বাঘের কথা শুনে আমি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে বেড়াতে এসেছি। জঙ্গল সাফারি করব। এখানে বাঘের ছবি পাওয়া গেছে শুনে খুব খুশি হয়েছি। বক্সা বাঘ বন আমাদের গর্বের জায়গা।' টানা পাঁচদিন জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকার পর শুক্রবার সাফারি খুলে যাওয়ায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিভিন্ন হোমস্টে ও গাইডদের মুখেও চওড়া হাসি। ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সহ সভাপতি বিপ্লব দে বলেন, 'শুধু বক্সা বাঘ বনকে কেন্দ্র করেই গোটা ডুয়ার্সের আর্থিক অবস্থা বদলে যেতে পারে। এটা আমাদের সকলকে বুঝতে হবে। একটা বাঘের ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়তেই পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে। এখানে আরও বেশি বাঘ থাকলে দেশের অন্যান্য ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো এই বনাঞ্চলেও হরদম বাঘের দেখা মিললে গোটা পৃথিবীর পর্যটকরা এখানে ভিড় করবেন। এখানকার অর্থনীতি বদলে যাবে। বক্সাকে যে কোনও মূল্যে আমাদের বাঘেদের উত্তম আবাস স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই কাজে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।'
রাজকুমার কর্মকার