পরিবারের লোকেরা খাটিয়ায় করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। তবে মায়েরও শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয়েছিল। এমনকি বেহাল রাস্তা থাকাই কোনরকম যানবাহন গ্রামে ঢোকে না। প্রায় মাঝেমধ্যেই প্রসূতিরা রাস্তাতেই প্রসব করে থাকে। গ্রামের বাসিন্দা পার্বতী রায় বলেন, বর্ষার সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়। তখন ঘাড়ে করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না অন্যান্য সময় তবুও সাইকেলের নিয়ে যাওয়া হয় অনেক সময় রোগীদের। গ্রামের একাধিক প্রসূতি রাস্তাতেই প্রসব করেছে। সঠিক সময়ে তাদের হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া যায়নি।
advertisement
এর আগে বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল খাটিয়ায় রোগী নিয়ে যাওয়ার ছবি।যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই আমরা করিনি। তবে এমন অমানবিক ছবি ঘিরে ইতিমধ্যে তোলপাড় গোটা মালদহ জেলা। সঙ্গে অনুন্নয়নের বাস্তব সত্য প্রকাশ্য। খাটিয়ায় রোগীকে নিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ওই রোগী। সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারলে হয়তো বেঁচে যেতেন মুমুর্ষ ওই মহিলা। এমনই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। মৃতের স্বামী কার্তিক রায় বলেন, স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স, টোটো, অটো চালকদের ফোন করেছিলাম। গ্রামের রাস্তা খারাপ বলে কোন গাড়ি আসতে চাইনি। অবশেষে খাটিয়ায় করে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম হাসপাতলে।
মালদহের বামনগোলা ব্লকের, গোবিন্দপুর মহেশপুর পঞ্চায়েতের মালডাঙা গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই গ্রামেরই গৃহবধূ মামনি রায় (১৯)। বছর কয়েক আগে এলাকার বাসিন্দা কার্তিক রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি জ্বরে ভুগছিলেন বলে জানা গিয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করেন। পরিবারের লোকেরা অ্যাম্বুলেন্স এমনকি গাড়ি ভাড়ার জন্য ফোন করেন বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু রাস্তা না থাকায় কোন গাড়ি আসতে চাইনি এমনটাই দাবি পরিবারের লোকেদের। তাই বাধ্য হয়ে অবশেষ খাটিয়াতে শুইয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁচানো যায়নি মামনিকে। বাড়িতে তাঁর ২ বছরের এক সন্তানও রয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা পার্বতী রায় বলেন, গ্রামের রাস্তার জন্য আমরা বহুবার আন্দোলন করেছি। প্রশাসনকে লিখিত আবেদন জানিয়েছি কিন্তু রাস্তা হয়নি। প্রসূতি থেকে রোগীদের এই ভাবেই নিয়ে যেতে হয় আমাদের। বর্ষার সময় আরও বেশি সমস্যা হয়।
হরষিত সিংহ