দোস্তজীর তিন খুদে অভিনেতা অভিনেত্রীর সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এই অবস্থায় তিনজনকেই দ্বাদশ শ্রেণি অবধি হোস্টেলে রেখে পড়াশোনার দায়িত্ব নিল রঘুনাথগঞ্জের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বুধবার পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ওই তিনজনকে স্কুলে ভর্তি করা হয়।
ডোমকলের ভগীরথপুরের বাসিন্দা তিন খুদে অভিনেতা অভিনেত্রী নাম কুড়োচ্ছে দেশ বিদেশে। প্রসূন চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত দোস্তজী সিনেমায় আরিফ সেখ ও আশিক সেখের ‘পলাশ' ও 'সাফি'র চরিত্রে অভিনয় নজর কেড়েছে দর্শকদের। ছোট হাসনা হেনার অভিনয়ও ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন জায়গায় শুটিং হয়েছে এই সিনেমার। তবে দোস্তজীর তিন খুদে অভিনেতা অভিনেত্রীর অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার, অভাবের সংসার। কারওর বাবা কেরলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন, কেউ আবার দিনমজুরের কাজ করেন। তিন পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী।
advertisement
আরও পড়ুন, মমতা বেরোতেই তুমুল হট্টগোল বিধানসভায়, বড় ইস্যুতে সুর চড়াল বিজেপি
আরও পড়ুন, 'মানুষের জন্য জীবন দিতে রাজি আছি', 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' ইস্যুতে তীব্র আক্রমণ মমতার!
ভগীরথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই দোস্তজীর জন্য এই তিনজনকে বেছে নেন প্রসুন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে ভগীরথপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরিফ ও আশিক এবং হাসনা হেনা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। প্রত্যেকেই হাইস্কুলে যাওয়া পরিবারের প্রথম প্রজন্ম। এই এলাকার বেশিরভাগ ছেলেরাই মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে চলে যায়। আশিক বা আরিফের ক্ষেত্রেও সে ঘটনার ব্যাতিক্রম হত না। কিন্তু এটা মেনে নিতে চাননি প্রসূন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
রঘুনাথগঞ্জের এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে ওই তিনজনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে। বুধবার ওই স্কুলেই অ্যাডমিশন টেস্ট দিয়ে তাঁরা ভর্তি হয়। ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মহাসিন মোল্লা বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি পড়ুয়াকে যে ভাবে যত্ন সহকারে পড়ানো হয়। ওদের কেউ ঠিক ততটাই গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই তিন পড়ুয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যত তৈরি করতে শিক্ষা ক্ষেত্রে সমস্ত সহযোগিতা করতে আমরা পাশে থাকব। অভাবের সংসারে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্বভার নেওয়ায় খুশি খুদে তারকা-সহ অভিভাবকেরা।
হাসনা হেনা মন্ডলের মা খন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, আমারমেয়ের অভিনীত সিনেমা দেশ বিদেশে নাম করছে, পুরস্কার পাচ্ছে। আমি খুব গর্বিত। আর প্রসূনবাবুর উদ্যোগে আমার মেয়ে এত ভাল স্কুলে পড়তে পারবে। প্রসুন বলেন, ওরা তিনজনেই যে পরিবেশে মানুষ হয়েছে সেখানে পড়াশোনার রীতি একেবারেই নেই। আমি চাই ওরা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়াক। আর আগামীদিনে ওদের উচ্চ শিক্ষার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।