প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শহরের গরিব মানুষের পাকাবাড়ি তৈরির জন্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প ‘হাউস ফর অল’। এই প্রকল্পে ঘর তৈরি হয় ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। যেখানে উপভোক্তাকে দিতে হয় মাত্র ২৫ হাজার টাকা। বাকি টাকার মধ্যে কেন্দ্রের অংশ দেড় লক্ষ টাকা এবং রাজ্য দেয় এক লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে চার থেকে পাঁচটি কিস্তিতে সরকারি অনুদানের টাকা আসে। প্রতিটি পর্যায়ে কাজের পর তার অনুসন্ধান রিপোর্ট দেখে সাধারণত পরবর্তী কিস্তির টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়।
advertisement
২০২০- ২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকায় ২৪০০ উপভোক্তার নাম এই প্রকল্পের জন্য অনুমোদন হয়। প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে, উপভোক্তাদের নিজের জমির অস্থায়ী নির্মাণ ভেঙে ফেলে জমি ফাঁকা করতে হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে বিকল্প পাকাবাড়ি নির্মাণ। এখানেই সমস্যায় পড়েছেন উপভোক্তারা। কারণ, তাঁরা নিজেদের কাঁচাবাড়ি ভেঙে ফেলেছেন। কিন্তু, পাকা বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির পর আর কোনও টাকা পাননি। ফলে শুরুর পরেই কার্যত থমকে গিয়েছে বাড়ি নির্মাণ। বাকি টাকা পাবেন? গরিব মানুষগুলোকে তার কোনও উত্তর জানায়নি পুরসভা বা প্রশাসন। ফলে সরকারি প্রকল্পের ফাঁপড়ে পড়ে এখন মাথায় হাত অসহায় উপভোক্তাদেরই। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন পুরাতন মালদা পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ। তবে, একইসঙ্গে গরিব মানুষের এই দুরবস্থার জন্য তিনি ঘুরিয়ে তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় সরকার আর বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের দিকে।
পুরপ্রধানের দাবি, আবাস যোজনায় রাজ্য তার প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে শুধু পুরাতন মালদা পুরসভার বকেয়া ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা। যদিও উপভোক্তাদের এই পরিস্থিতির জন্য পাল্টা তৃণমূলের আর্থিক দুর্নীতি ও নয়ছয়কেই দায়ী করেছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর পাল্টা দাবি, কেন্দ্র টাকা দিতে প্রস্তুত। রাজ্য হিসেব দিতে পারছে না। এতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।এদিকে কেন্দ্র ও রাজ্যের এই টানাপোড়েনের মধ্যেই এখন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের দুর্দশা ঘুঁচবে কবে।