কালীপার্ক মোড় থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এভিন্যু ধরে কয়েক কদম এগোলে জগদীশ স্পোর্টিং ক্লাব। আন্দামানের আদি বাসিন্দা জারোয়া সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি, রোজকার জীবনযাপন সবকিছু তুলে ধরা হয়েছে এখানে। জারোয়ারা জঙ্গলের মধ্যে যে ধরনের বাড়িতে থাকে, সেই ধরনের মণ্ডপসজ্জা তৈরি করেছেন শিল্পী। জারোয়ারা যে ধরনের দেব দেবীর আরাধনা করেন, প্রতিমার রুপ অনেকটা সেরকম দেওয়া হয়েছে। আলোকসজ্জাতেও চমক রয়েছে এখানে। এখান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে প্রগতি সংঘ।
advertisement
পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা হলেন বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে বিধাননগরের কাউন্সিলর আরাত্রিকা ভট্টাচার্য। তিনি জানালেন, ‘‘প্রতি বছর এখানকার মণ্ডপসজ্জা দেখার জন্য বিপুল দর্শক সমাগম হয়। এ বছর জয়পুরের বিড়লা মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। যিনিই রাম, তিনিই রহিম। সব ধর্মের ধর্মগুরুদের স্থান দেওয়া হয়েছে মণ্ডপ সজ্জায়।
‘যুদ্ধ এবার নারায়নপুরে’ এমন পোষ্টারে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে গোটা বিমানবন্দর এলাকা।
আরও পড়ুন: প্রতি মাসে ১০০ টাকা ডোনেশন দিতে হবে পড়ুয়াদের, কর্নাটক সরকারের নিয়মে বিতর্ক
আরও পড়ুন: সরযূ নদীর ঘাটে ১৮ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপোৎসবের সূচনা প্রধানমন্ত্রীর, আজ অযোধ্যা আলোকজ্জ্বল...
জানা গেল, নারায়নপুর থানার পাশে অবস্থিত সবুজ সঙ্ঘের এবারের থিম যুদ্ধ। স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে সার্জিকাল স্ট্রাইককে মাথায় রেখে ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধ দেখা যাচ্ছে এই মণ্ডপে। যেখানে তিরিশ জন শিল্পী লাইভ সেনা বাহিনী ও জঙ্গির পোষাক পরে অভিনয় করছেন হাতে রাইফেল, মেশিনগান নিয়ে। ২৭ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১২ টা অবধি কৃত্রিম যুদ্ধ চলবে এই মণ্ডপে। সেজন্য মন্ডপ সজ্জায় পাহাড়, জঙ্গল ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে উপযুক্ত আলো ও ধ্বনি।
নারায়নপুর এলাকার সবচেয়ে নামী পুজো হল নেতাজী সংঘের কালী পুজো। এটা বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নিজের পুজো বলে পরিচিত। এই পুজোর থিম সং গেয়েছেন কুমার শানু। মানব দেহেরে পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও তাদের কাজকর্মের ভাবনাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মন্ডপ সজ্জায়। ফাইবার, প্ল্যাস্টিক, প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। তার সঙ্গে মেকানিক্যাল কিছু যন্ত্রপাতি ও আলোর ব্যবহারে সমগ্র মন্ডপটিকে অনবদ্য দৃষ্টিনন্দন পুজো প্যান্ডেলে পরিণত করেছে।
চমক হিসাবে থাকছে হেলমেট জেতার সুযোগ। প্রতি ঘন্টায় দর্শকদের কুপন দেওয়া হবে। এবং সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফের প্রচারে প্রতি ঘন্টায় পাঁচটি করে হেলমেট জেতার সুযোগ থাকছে দর্শনার্থীদের। আর খুদে দর্শকরা প্রত্যেকে চকোলেট পাবেন এখানে ঠাকুর দেখতে এসে।
বিমানবন্দরের পাঁচিল লাগোয়া নারকেল বাগান এলাকায় প্রতি বছর বল খেলার মাঠে বিশাল মন্ডপ তৈরি করে শক্তি সংঘ। এলবার্ট হল মিউজিয়ামের আদলে প্রায় ১১০ ফুট চওড়া ও ৭০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে এই ক্লাবে। পুজোয় কম্বল বিতরণ, মশারি বিতরণ করা হবে। পুজো মণ্ডপ চত্বরেই চলা মেলায় ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা, জানালেন পুজো কমিটির কর্তা প্রসেনজিৎ সরকার।
বয়স মাত্র উনিশ হলেও, প্রতি বছর চমক উপহার দিয়ে থাকে নিউ টাউনের বালিগড়ি চকপাঁচুড়িয়া মিলিত সংঘ। পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা কমল মণ্ডল জানালেন, এ বছর তাঁরা অক্ষরধাম মন্দিরের আদলে কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরি করেছেন। প্রতিমা তৈরি করেছেন শিল্পী মোহনবাঁশি রুদ্র পাল। সব মিলিয়ে জমজমাট জেলার কালীপুজো।
রুদ্র নারায়ন রায়