বর্তমানে বাংলার ফুচকার উপকরণ অনুসরণ করেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হচ্ছে ফুচকা। তবে রাজ্যের কোথায় আছে এই ফুচকা গ্রাম, জানেন! উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাঁচরাপাড়ার শহিদ কলোনি আজ পরিচিত ফুচকা গ্রাম হিসেবেই। কাঁচরাপাড়ার শহিদ কলোনী এলাকার প্রায় ১০০টির বেশি পরিবার ফুচকা তৈরি করেই জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
আরও পড়ুনঃ স্বামীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলেন, বাড়ি ফিরতেই চক্ষু চড়কগাছ! চাঞ্চল্য শান্তিপুরে
advertisement
জল ফুচকা ছাড়াও চিকেন ফুচকা, মটন ফুচকা, চকলেট ফুচকা, দই ফুচকা, ভুট্টা ফুচকা, ঘুগনি ফুচকা, চাটনি ফুচকা আরও নানা ধরনের ফুচকাপাওয়া যায়। সকাল হতেই ফুচকা তৈরির কাজে লেগে পড়েন পল্লির বাসিন্দারা। আটা, ময়দা, সুজি, চালের গুঁড়ো এইসব দিয়ে মণ্ড প্রস্তুত করে, সেগুলো ছোট ছোট রুটির আকারে বেলে নেওয়া হয়। তারপর হালকা করে শুকিয়ে কাঠের জালে ভাজা হয়। কেউ আবার কয়লার আঁচেও ফুচকা ভেজে থাকেন। তারপর মুচমুচে বল তৈরির জন্য সেগুলোকে রোদে ফেলে রাখা হয়। সেই সঙ্গে চলে সুস্বাদু মশলা তৈরির কাজ। পাকা তেঁতুল গোলা, গন্ধরাজ লেবু দিয়ে টক জল বানিয়ে ফুচকার পেট ফাটিয়ে, পুর ভরে পরিবেশন করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বলাই গাইন দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ফুচকা তৈরি করেই সংসার চালাতেন। সেই থেকেই সূচনা কাঁচরাপাড়ার শহিদ কলোনির এই ফুচকা গ্রামের। বর্তমানে কাঁচরাপাড়া শহিদ কলোনির এই গ্রাম সকলের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে ফুচকার জন্য। এলাকার তৈরি ফুচকা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখন এই এলাকায় ফুচকা খেতে ছুটে আসেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়িতেও এই এলাকার ফুচকা ব্যবসায়ীরা স্টল দেন।
তবে ফুচকা গ্রামের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত সেভাবে আর্থিক সহযোগিতা মেলেনি। ব্যবসা চালাতে বিভিন্ন বেসরকারি মাইক্রো ফাইনান্স সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে, টিকিয়ে রেখেছেন এই ফুচকা শিল্প। কাঁচরাপাড়ার শহীদ কলোনির এই ফুচকা গ্রামের ইতিহাস অনেকেরই অজানা। বাঙালির মুখরোচক খাবারের মধ্যে দিয়েই এই গ্রামের অনেক পরিবারের পেট চলে। বর্তমানে এই ফুচকা গ্রাম ঘুরে দেখতেও, প্রচুর মানুষের ভিড় জমছে প্রতিদিন।
রুদ্র নারায়ন রায়