কথিত আছে, যশোরের জমিদার কালিবাবুর মা, গঙ্গায় স্নান করতে যাবেন মনস্থির করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় রাস্তা ছিল না। কিভাবে যাবেন মা ? মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে তিনি তখন প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন। তারপর সেই রাস্তায় ছায়া তৈরির জন্য দু'ধারে লাগানো হয় বহু শিরিষ গাছ (North 24 Parganas News)।
advertisement
ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে যশোরের জমিদার কালিবাবু যশোর থেকে কলকাতা অবধি, তৈরি করে দিয়েছিলেন এই রাস্তা, যার বর্তমান নাম যশোর রোড। গত কয়েক বছর আগে যাতায়াতের সুবিধার জন্য যশোর রোড চওড়া করার দাবি ওঠে। শুরু হয় বনগাঁ থেকে কলকাতা পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করার কাজ। রাস্তা চওড়া করতে প্রয়োজনে শুরু হয় প্রাচীন গাছগুলিকে কেটে ফেলার কাজ। গাছ কাটলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। এই কারণ দেখিয়ে কিছু পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হাইকোর্টে মামলা করে। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় গাছ কাটা। তবে রাস্তার দু'ধারে বহু প্রাচীন গাছ, বয়সের কারণে মারা যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা তৈরি হতেই এক অনবদ্য সিদ্ধান্ত নেয় বনগাঁ পুরসভা। মৃত শিরিষ গাছগুলিকে কেটে না ফেলে তাতে ভাষ্কর্যের রূপ দেওয়ার ভাবনা মাথায় আসে পুরকর্তাদের। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। (North 24 Parganas News)
ইতিমধ্যে শান্তিনিকেতন এবং রবীন্দ্রভারতী থেকে ১২ জন শিল্পী দিনরাত পরিশ্রম করে যশোর রোডের ধারে মৃতগাছের গায়ে শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলেছেন(North 24 Parganas News)। আপাতত তিনটে গাছে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে অপরূপ শিল্প নির্দশন। আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে বাকি আরও ২০ টি গাছে এমনই সৌন্দার্যায়নের ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বনগাঁ পৌরসভার পৌর প্রশাসক গোপাল শেঠ। গোপাল বাবু জানান, যশোর রোডের পাশে আপাতত তিনটে গাছে শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলতে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। বাকি গাছগুলি না কেটে, এমন শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলতে পারলে ভাস্কর্য সৃষ্টি হওয়া এই গাছগুলো বনগাঁ শহরের রাস্তার ধারে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। মরা গাছগুলোকে রেখে, তাতেই পৌরসভার এমন শিল্পচেতনার ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিল্পঅনুরাগী থেকে বনগাঁবাসীরা।
Rudra Narayan Roy