শত অভাব ও প্রতিকুলতাকে সরিয়ে দিয়ে বাবার স্বপ্নপুরন করেছেন ইসমাইল সরদার। বাল্যবয়স থেকেই জেলাস্তরের এক একটি ইভেন্টে (Event) পদক এনে ইসমাইল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। প্রতিভা দেখে তার উপর নজর পড়েছিল তৎকালীন বাম সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রী (Sports Minister) সুভাষ চক্রবর্তীর। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি চারঘাটের অ্যাথেলেটিক (Athletic) ইসমাইল সরদারকে। একের পর এক পদক জয় করে তিনি ভরিয়েছেন তার সাফল্যের ঝুড়ি। ১৯৮৯ সালে দেশে অনুষ্ঠিত অ্যামচার অ্যাথেলেটিক ফেডারেশান অফ ইন্ডিয়ার উদ্যোগে ১০ কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে, সারা দেশের ক্রীড়ামহলের সুনজরে চলে এসেছিলেন ইসমাইল।
advertisement
অল ইন্ডিয়া ম্যারাথন রেসে ৪২ কিলোমিটারের টার্গেট তিনি শেষ করেছিলেন ২ ঘন্টা ৪৯ মিনিটে। সেই প্রতিযোগিতায় হয়েছিলেন তৃতীয়। স্টেট অ্যাথেলেটিকে একাধিকবার অংশগ্রহন করে বেশিরভাগ প্রতিযোগীতায় প্রথমস্থান অধিকার করে খেলাধুলার জগতে বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছেন ইসমাইল সরদার। বর্তমানে বয়স ৫০ পেরোলেও এখনো তিনি তার অভ্যাস বদলান নি। নিয়মিত সকাল থেকেই এই বয়সেও চালিয়ে যাচ্ছেন তার প্র্যাক্টিস। তার এই অনুশীলন থেকে প্রেরনা পেয়ে চারঘাট এলাকার বহু যুবক অ্যাথেলেটিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এলাকার দুঃস্থ পরিবারের প্রতিভাবান কাউকে পেলেই ইসমাইলবাবু তাকে অ্যাথেলেটিক হওয়ার সবকরম কৌশলের পাঠ দিয়ে থাকেন। এমনকি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে যে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন তাও বিনে পয়সায় যুবকদের দিয়ে থাকেন তিনি।
সম্প্রতি বিশিষ্ট অ্যাথেলেটিক ইসমাইল সরদারকে রাজ্য ক্রীড়া সেলের আজীবনের সদস্যপদ দিয়ে সম্মান জানানো হয়। দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে একজন সফল অ্যাথেলেটিক হওয়ার পরও ইসমাইল সরদার আক্ষেপ করে জানানেন, আমাদের গ্রামবাংলায় বহু প্রতিভার জন্ম হলেও অভাব আর সঠিক পথপ্রদর্শকের অভাবে হারিয়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে খেলাধুলার উন্নতির জন্য যদি সঠিক প্রশিক্ষন বা সুযোগের রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয় তবে বাংলা থেকেও আগামীদিনে উঠে আসতে পারে মিলখা সিং-এর মতো এক একটি রত্ন। ইসমাইলবাবু আরও জানালেন, শরীরে যতদিন সামর্থ থাকবে ততদিন অ্যাথেলেটিক গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাবেন তিনি।