এক ৩০ বছর বয়সী মহিলা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের গাড়ি দিয়ে তার প্রাক্তন বাগদত্তার স্কুটারকে ধাক্কা দেয় এবং পরে প্রকাশ্যে তাকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে শেলা এলাকার সান অ্যান্ড স্কাই ভিউ সাইটের কাছে।
আহত ব্যক্তি, জয়কুমার প্যাটেল, বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত মহিলা, রিঙ্কু ওরফে রিঙ্কি প্যাটেল, ঘটনার পর থেকেই পলাতক। পুলিশের একাধিক দল তাকে খুঁজছে, তবে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: পাসপোর্টের নিয়মে বিশেষ পরিবর্তন, এখন থেকে ‘এই’ সার্টিফিকেট মাস্ট, জানুন…
এই ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে ১৩ বছর আগে, যখন জয়কুমারের সঙ্গে রিঙ্কুর বাগদান হয়। শুধু তাই নয়, তাদের দুই পরিবারও একে অপরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। রিঙ্কুর ভাইয়েরও বিয়ে ঠিক হয়েছিল জয়কুমারের দিদির সঙ্গে। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে দুই পরিবারের সম্পর্ক ভেঙে যায় এবং বিয়ে বাতিল হয়ে যায়।
এরপর দু’জনেই নিজেদের জীবনে এগিয়ে যান। রিঙ্কু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সন্দীপ প্যাটেলের সঙ্গে এবং জয়কুমার তার ব্যবসার দিকে মনোযোগ দেন। ২০১৬ সালে জয়কুমারও বিয়ে করেন। কিন্তু গত বছর দীপাবলির সময় আচমকা রিঙ্কু যোগাযোগ করে জয়কুমারের সঙ্গে।
এফআইআর অনুযায়ী, দীপাবলির সময় রিঙ্কু ফোন করে জয়কুমারের পরিবারের খোঁজখবর নেয় এবং দুঃখের সঙ্গে বলে, “আমরা যদি বিয়ে করতাম, তবে সবকিছু আজ অন্যরকম হত।” এরপর থেকেই তারা নিয়মিত ফোনে কথা বলতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চের পর ১৫ বছরের পুরোনো গাড়ির জন্য মিলবে না পেট্রল! কোথায় এমন হচ্ছে জানুন…
কিন্তু কিছুদিন পর জয়কুমার বুঝতে পারেন যে রিঙ্কুর ব্যবহার বদলে গেছে। তার রাগী স্বভাবের জন্য জয়কুমার দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন এবং একসময় তাকে ব্লকও করে দেন। কিন্তু রিঙ্কু বারবার নতুন নম্বর থেকে ফোন করতে থাকে।
ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রিঙ্কু জয়কুমারকে সতর্ক করে জানায় যে তার স্বামী তাদের ফোনালাপ সম্পর্কে জেনে গিয়েছে এবং তিনি বাড়িতে এসে অশান্তি করতে পারেন। এরপরই জয়কুমার তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে দেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে জয়কুমার যখন স্কুটার নিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা দেয়। তিনি রাস্তায় পড়ে যান এবং তখনই দেখেন, রিঙ্কু গাড়ি থেকে নেমে আসছে হাতে ছুরি নিয়ে! কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই রিঙ্কু ছুরি দিয়ে জয়কুমারের পেটে আঘাত করে। জয়কুমার যখন পালানোর চেষ্টা করেন, তখন সে আবারও তার পিঠ এবং হাতে ছুরি চালায়।
এই সময় এক বাইক আরোহী ঘটনাস্থলে এসে সাহায্য করেন। তিনি দ্রুত জয়কুমারকে স্কুটারে উঠতে বলেন এবং পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। তখন রিঙ্কু বুঝতে পারে যে তার শিকার পালিয়ে যাচ্ছে, তাই সে দ্রুত নিজের গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়ে।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জয়কুমারকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বোপল থানার ইন্সপেক্টর বি.টি. গোহিল বলেন, “আমার পুরো সার্ভিস ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা আগে দেখিনি।” অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশের অভিযান জারি হয়েছে।
এই ঘটনার পরই পুলিশ অভিযুক্ত রিঙ্কুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে এবং তাকে গ্রেফতারের জন্য একাধিক দল গঠন করে। যদিও তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে, তবে পুলিশের গোয়েন্দা দল তাকে খুঁজে বের করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
পুলিশ মনে করছে, ১৩ বছর ধরে জমে থাকা প্রতিশোধের আগুনই এই হামলার কারণ। এই ঘটনা যে শুধুমাত্র শহর নয়, গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে!