উচ্চতার নিরিখে কুতুব মিনারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ৪০-তলবিশিষ্ট দুটি টাওয়ার- অ্যাপেক্স (Apex) এবং সিয়ান (Ceyane)। নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের কাছেই নয়ডার সেক্টর ৯৩এ-তে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে যেন আকাশ ছুঁয়েছিল ওই ট্যুইন টাওয়ার। উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সুপারটেকের এমারেল্ড প্রোজেক্টের অধীনে তৈরি এই ট্যুইন টাওয়ারে রয়েছে ৯০০টিরও বেশি ফ্ল্যাট।
advertisement
আরও পড়ুন: সময় লাগবে মাত্র ৯ সেকেন্ড, নয়ডার ট্যুইন টাওয়ার উড়িয়ে দেবে আড়াই হাজার কেজি বিস্ফোরক
ফলে এত বড় একটা বহুতল ভাঙতে গিয়ে বহু কাঠখড়ও পোড়াতে হচ্ছে। এমনকী কর্তৃপক্ষ এবং সরকারকে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীনও হতে হচ্ছে। কারণ বিশাল পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার করে টাওয়ার ধ্বংসের পরে সেই এলাকার পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়বে, সেটাই এখন মূল ভাবনা। শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী কালে সেখানে কোনও কিছু নির্মাণ করতে গেলে নির্মাণকর্মীদের কী কী সমস্যার মুখে পড়তে হবে, সেটা নিয়েও চিন্তা রয়েই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মহিলাকে অপমান! আবাসনে ঢুকে বিজেপি নেতারই সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দিল যোগীর বুলডোজার
কিন্তু কেন এই এত দামি প্রকল্প গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সুপ্রিম কোর্টই (Supreme Court) ওই ট্যুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ পর্যালোচনা করে তারা দেখেছে যে, নিয়ম মেনে ট্যুইন টাওয়ার তৈরি করা হয়নি। এমারেল্ড কোর্ট গ্রুপ হাউজিং সোসাইটির রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে একটি আবেদন দাখিল করা হয়েছিল। তাতে দাবি করা হয় যে, ২০১০ সালের উত্তরপ্রদেশ অ্যাপার্টমেন্টস আইন না-মেনেই ট্যুইন টাওয়ারটি বানানো হয়েছিল। দুই টাওয়ারের মধ্যে যে ন্যূনতম দূরত্ব থাকা উচিত, তা রাখা হয়নি। এই সব দিক খতিয়ে দেখে গত বছরেই ওই জোড়া টাওয়ার ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়ে শীর্ষ আদালত জানায় যে, উত্তরপ্রদেশ অ্যাপার্টমেন্টস আইনের আওতায় প্রতিটা ফ্ল্যাটের মালিকের সম্মতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ-ক্ষেত্রে সেই সম্মতি না-নিয়ে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছে ট্যুইন টাওয়ার।
কিন্তু কীভাবে ভাঙা হবে এই দুই টাওয়ার? এই দায়িত্ব পেয়েছে মুম্বইয়ের এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিং (Edifice Engineering) এবং তাদের দক্ষিণ আফ্রিকার অংশীদার ফার্ম জেট ডিমোলিশনস (Jet Demolitions)। সূত্রের খবর, ৩৭০০ কেজি বিস্ফোরক ঠেসে ভরা হবে বহুতলে। তার পর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে ওই টাওয়ার। আর এই আকাশছোঁয়া বহুতল ভাঙতে মাত্র ১৫ সেকেন্ড সময় লাগবে। এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের উৎকর্ষ মেহতা (Utkarsh Mehta) জানিয়েছেন যে, সব বিস্ফোরক ধারাবাহিক ভাবে বিস্ফোরিত হতে মাত্র ৯ থেকে ১০ সেকেন্ড সময় লাগবে। আর জোরালো বিস্ফোরণের জেরে এলাকায় প্রচণ্ড শব্দও হবে। বিস্ফোরণের পরেই এক বারে পুরো বহুতল ভেঙে পড়বে না। এর জন্য আরও ৪ থেকে ৫ সেকেন্ড সময় লাগবে।