নবী যখন মদিনায় আসেন, তখন সেখানকার জনজীবনে দু'টি বার্ষিক উৎসবের দিন প্রচলিত ছিল। এই দিনগুলি মদিনাবাসীরা নিজেদের মতো খেলাধুলো, আমোদ-প্রমোদ, পান-ভোজনের মধ্যে দিয়ে কাটত। এই প্রসঙ্গে নবী মদিনাবাসীকে বলেন যে পরমপূজ্য আল্লাহ তাঁদের মঙ্গলবিধানের জন্য এই দিনদু'টিকে শুভাশীর্বাদে পূর্ণ করেছেন, তিনি এদের পরিবর্তন করেছেন ইয়াওমুল ফিতর এবং ইয়াওমুল আযহা নামে।
advertisement
ইতিহাস এবং ইসলামি ধর্মগ্রন্থ স্বীকৃত এই তথ্য থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে- উৎসবের নামটি আদতে ইয়াওমুল, বা স্পষ্ট করে বললে ইয়াওমুল ফিতর! যা চলতি বছরে ভারতে ১৪ মে উদযাপিত হওয়ার কথা আছে। একেই আমরা বলছি ইদ বা ইদ-উল-ফিতর। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে ইয়াওমুল ফিতর কী ভাবে বদলে গেল ইদ-উল-ফিতরে? এই নামবদলের রহস্যটা আদতে কী?
এই জায়গায় এসে যে কোনও সংস্কৃতির নামকরণের মনস্তত্ত্বের দিকে দৃষ্টিপাত করতে হয়। পরিবারের সদস্যের নাম হোক বা সামাজিক কোনও কিছুর- অনেক সময়েই মানে ধরে নামকরণ করা হয়ে থাকে। যেমন, শারদীয়া, অর্থাৎ যা শরৎ কালে উদযাপিত হয়। ঠিক তেমন করেই ইয়াওমুলের বদলে জনপ্রিয় হয়ে উঠল কালের ধারায় ইদ শব্দটি। ইদের অর্থ যা বার বার ফিরে আসে। পবিত্র এই উৎসব বছরে দু'বার উদযাপিত হয়, তাই তার আখ্যা হল ইদ!
আর ফিতর শব্দেরও রয়েছে নিজস্ব অর্থ- ভেঙে যাওয়া! ইদের আগে যে তিরিশ দিন রোজা পালনের কাল বা রমদান উদযাপিত হয়, তা ইদের আগের দিন সন্ধ্যাবেলায় কাস্তের মতো চাঁদ দেখে ভাঙা হয়, সেই জন্যই এই উৎসবকে বলা হয় ইদ-উল-ফিতর। জানা যায়, এই পবিত্র রমদান কালেই নবী মহম্মদ কুরানের অন্তর্দৃষ্টি পেয়েছিলেন। তাই এই ইদ আধ্যাত্মিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ, একই সঙ্গে দানধ্যানের প্রথার সূত্রে সমাজের দারিদ্র্য নিবারণের প্রয়াসও বটে!