সম্প্রতি, প্রথম দফার প্রচার সেরে রাজ্যে ফিরেছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। ত্রিপুরা কেমন দেখলেন এই প্রশ্নের জবাবে অগ্নিমিত্রা বলেন, ''কোনও লজ্জা নেই বলতে, ত্রিপুরা গিয়ে দেখে এলাম সংগঠন কাকে বলে!"
আরও পড়ুন: আসন্ন ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন, মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা
advertisement
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারী ত্রিপুরা বিধানসভার ভোট। দলের রীতি অনুযায়ী, পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরার ভোট প্রচারে এ রাজ্য থেকে ৩০ বিধায়কের তালিকা তৈরি করেছিল রাজ্য বিজেপি। সেই তালিকা ধরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে অগ্নিমিত্রা পালেরা পালা করে ত্রিপুরা যাচ্ছেন ভোটের প্রচারে। প্রচারের জন্য অগ্নিমিত্রার জন্য বরাদ্দ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার কেন্দ্র বড়দোয়ালি। একক ভাবে প্রচারের পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গে একমঞ্চে সভা করেছেন অগ্নিমিত্রা।
ত্রিপুরা নির্বাচনে প্রচার করতে গিয়ে যেটা সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে রাজ্য বিজেপির নেতাদের, তাহল ত্রিপুরায় দলের সংগঠন। অগ্নিমিত্রার কথায়, ''আমাদের তুলনায় ত্রিপুরাতো কিছুই না। মাত্র ৬০ টা আসনের বিধানসভা। কিন্তু, রাজ্যের কোনায় কোনায় পৌঁছে গিয়েছে দলের সংগঠন। প্রচারে বেরিয়ে দেখলাম, প্রতিটি এলাকায় তৈরি দলের নির্বাচনী অফিস। টিনের চালে কমলা রঙের পোঁচ। ছোট্ট অফিসের চারপাশে দলীয় পতকায় সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন দলের কর্মীরা। আমাদের এখানে একটা মণ্ডল কমিটির বৈঠকে কর্মী খুঁজে পাওয়া যায় না। আর, ওদের ওখানে দেখে এলাম বুথ কমিটির বৈঠকে ঘর ভর্তি কর্মী। সংগঠন কাকে বলে, ত্রিপুরায় গিয়ে দেখে এলাম।"
অগ্নিমিত্রার কথা শুনে দলের এক রাজ্য নেতা মুচকি হেসে বললেন, ''এটা কি নিছকই আত্মসমালোচনা? নাকি এই সুযোগে রাজ্য নেতৃত্বকেও নিশানা করলেন বিজেপির 'অগ্নিকন্যা' অগ্নিমিত্রা?"
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় বাম-কংগ্রেস জোটের জট কাটানোর দায় মানিকের উপরেই, নজর রাখছে বিজেপি
পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০১৪ থেকে রাজ্যে দলকে শক্তিশালি করতে অমিত শাহ থেকে জে পি নাড্ডা, রামলাল থেকে সন্তোষরা চেষ্টার কসুর করছেন না। নিয়ম করে প্রতিটি সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে বুথ সংগঠনে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু, ২৪- এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বের বৈঠকেও সুনীল বনশাল, মঙ্গল পান্ডে কিম্বা আশা লাকড়ার মতো কেন্দ্রীয় নেতারা ক্রমশই হতাশ হয়ে পড়ছেন রাজ্যের তৃণমূল স্তরের সংগঠনের হাল দেখে। সেখানে, পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরায় দলের সংগঠন এ রাজ্যকে পেছনে ফেলে দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে। এই কারণেই বোধহয় ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারে আর এ রাজ্য বিরোধী দলের খাতায় নাম লেখাতে হয় বিজেপিকে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এর পিছনে সেই রাম বাম তত্ত্বেরই ছায়া। ত্রিপুরায় দীর্ঘ দিনের বাম জামানার অবসান হয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে বাম থেকে রামে পালা বদলের কারণে। ফলে, বাম নেতা কর্মীদের রাজনৈতিক রং লাল থেকে গেরুয়ায় বদল হলেও, সাংগঠন নির্ভরতায় কোনও ভাঁটা পড়েনি।