গ্রামের এক মন্দিরে বসেছে বিবাহবাসর। বরের হয়তো এটি প্রথম বিবাহ নয়, কারণ তাঁর বয়স ৫০-এর কোঠায়। পাশে বসে বধূটি মোটেও সলজ্জ নয়। বরং সে চিৎকার করে কাঁদছে, অনুনয় করছে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। মেয়েটির বয়স ১৩, নাবালিকা। আইন অনুযায়ী এই বিবাহ অবৈধ। তবু সেই মেয়ের মাথায় ওঠে সিঁদুর, মন্দিরের বাইরে এক সময় এসে দাঁড়ায় গাড়ি। শ্বশুরবাড়ি যাত্রার আগে পর্যন্ত মেয়েটি তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুনয় করে যায়।
advertisement
সারা দেশে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগী। তবু সেই ধারায় কোনও ভাবেই ছেদ পড়ছে না। বিহারে প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনার কথা জানা যায়। প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ করে, কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয় না।
সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রাথমিক ভাবে এই ভিডিওটির সত্যতা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও সংবাদমাধ্যম তা খতিয়ে দেখেনি।
আরও পড়ুন: ভারতে ক্যাকটাসের মতো দেখতে শুঁয়োপোকা, কামড়ে কি মৃত্যু নিশ্চিত? ইন্টারনেট উত্তাল!
জানা গিয়েছে, বিহারের দ্বারভাঙা জেলার কুশেশ্বরস্থান থানার অন্তর্গত মধুবন গ্রামে ওই নাবালিকা বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় একটি মন্দিরে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। নাবালিকার বয়স ১৩, অন্য দিকে পাত্র ৫০ পেরিয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায় নাবালিকা মেয়েটি এই বিয়ে বন্ধ করার জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছে কাকুতি-মিনতি করছে। সে বলে, ‘আমি এই বিয়ে করতে চাই না। বিয়ে করলে মরে যাব।’ কিন্তু তার আর্জি কানে তুলতে নারাজ পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বরং নিস্পৃহ ভাবেই মেয়েটির বিয়ের যাবতীয় কাজ সেরেছেন।
আরও পড়ুন: কনফার্ম টিকিট হঠাৎ বাতিল, বিপাকে ভেলোর যাওয়ার বহু যাত্রী! বাংলায় মাথায় হাত অনেকের
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মেয়েটির দুপাশে বসে রয়েছেন দুই প্রাপ্তবয়স্কা নারী। তাদের একজন জোর করে ঘাড় ও দুই হাত ধরে রয়েছেন। অন্যজন সাহায্য করছেন বর যাতে সিঁদুরদান প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করতে পারেন।
সব থেকে বড় বিষয়, মেয়েটি কান্নাকাটি করছে দেখে পুরোহিত তাকে তিরস্কারও করেছেন, ভিডিওতে দেখা গিয়েছে তাও। নাবালিকা কনের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও দেবতা সাক্ষী রেখে মিটে যায় বিয়ে। মন্দিরের বাইরে এসে দাঁড়ায় গাড়ি। সেই সময় কোনও এক আত্মীয় জিজ্ঞাসা করেন, ভাল লাগছে?
মেয়েটি আবার চিৎকার করে বলে, এই বরের সঙ্গে আমি ভাল থাকব কী করে! কিন্তু গাড়ি তাকে তুলে নিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির দিকে।
ভিডিও ভাইরাল হলেও এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে এখনও খবর পাওয়া যায়নি।
