রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের ব্যবস্থাপনায় এদিন এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। আর এই বৈঠকে ত্রিপুরার জন্য আরও একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার উপস্থিতিতে এদিন ৮ জন শিল্প উদ্যোগপতির সঙ্গে ৩১২.৩৮ কোটি টাকার মৌ স্বাক্ষর করা হয়। বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এবিষয়টি নিয়ে সন্তোষ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যে কোনও রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা অন্যতম ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে রাজ্যে ৭টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐকান্তিক প্রয়াসে রাজ্যে আরও জাতীয় সড়ক গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে ত্রিপুরা। এক্ষেত্রে ত্রিপুরার ইন্টারনেট পরিষেবা দেশের মধ্যে তৃতীয় শক্তিশালী গেটওয়ে হিসেবে স্থান পেয়েছে। যা বিনিয়োগকারী এবং শিল্প উদ্যোগপতিদের জন্য সহায়ক হবে। রেল পরিষেবার ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে ত্রিপুরা। বর্তমানে আগরতলা, সাব্রুম থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১২টি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু রয়েছে। সেই সঙ্গে বিমান পরিষেবাও অনেক উন্নত হয়েছে আমাদের রাজ্যে।’
advertisement
আরও পড়ুনঃ সিকিমে ফের দুর্যোগ, ঘুরতে গিয়ে আটকে প্রচুর পর্যটক! পরে যা হল
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আরও বলেন, 'খুব তাড়াতাড়ি সাব্রুমের মৈত্রী সেতু উন্মুক্ত হয়ে যাবে। এটি চালু হলে ত্রিপুরা হবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম গেটওয়ে। এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশের মংলা বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর, মাতারবাড়ি বন্দরের মাধ্যমে পণ্য সামগ্রী আনা-নেওয়া খুবই সহজ হয়ে উঠবে। আগামীতে ত্রিপুরার ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। রাজ্য সরকারও যতটুকু সম্ভব রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ত্রিপুরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ। ত্রিপুরার বাঁশ জাতীয় সামগ্রীর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।’
আইটি, শিক্ষা, রাবার, ধুপকাঠি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই সব ক্ষেত্রে উদ্যোগপতিদের আরও বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, টিআইডিসি চেয়ারম্যান নবাদল বনিক, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা সহ-প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকগণ।
আরও পড়ুনঃ কারও নাম সুপ্রিম কোর্ট, কেউ গুগল! ভারতেই রয়েছে এমন সব আশ্চর্য মজার নামের মানুষ
উদ্বোধনী পর্ব শেষে শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সেখানে ত্রিপুরায় বিনিয়োগ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এবার আরেকটি মেডিকেল কলেজ পেতে যাচ্ছে ত্রিপুরা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘ধলাই জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য ৮টি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। ডেটন ন্যাচারাল রিসোর্সেস প্রাইভেট লিমিটেড ধলাই জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ২৪৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এর পাশাপাশি নর্থ ইস্ট ভেনিয়ার্স এবং প্লাইউড এলএলপি প্লাইউড এবং ব্ল্যাক বোর্ড স্থাপন করতে ১৩.৮৮ কোটি টাকা, আর কে নগরে ফ্লাশ ডোর উৎপাদন ইউনিট, ধুপকাঠি সেক্টরে কাঁচামাল ব্যাঙ্ক স্থাপনে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে৷’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮টি সেক্টরে মোট ৩১২.৩৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এদিন সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ১৪১ জন বিনিয়োগকারী অংশগ্রহণ করেন।