প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দয়ারাম সকালে নিজের আখখেতে ফসল দেখতে গিয়েছিলেন। সেই সময় ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটি বাঘ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঘটি দয়ারামের গলা ও বুক আঁচড়ে ধরে ২০ মিটার দূরে একটি আখের জমিতে টেনে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদ, ব্যালেন্স হারিয়ে খাদে পর্যটক! দেখুন ভাইরাল ভিডিও…
advertisement
চিৎকার শুনে আশপাশের কৃষকরা ছুটে এলেও তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। দয়ারামের মৃত্যু ইতিমধ্যেই ঘটে গেছে। ভিড় জমতে দেখে বাঘটি পাশের খালের ওপর দিয়ে পালিয়ে যায় এবং অন্য একটি খেতে ঢুকে পড়ে।
বিভাগীয় বন আধিকারিক ভরত কুমার জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য একটি দল পাঠানো হয়েছে। এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ঘটনার পর গ্রামে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বন দফতর বারবার অভিযোগ জানানোর পরেও এলাকায় বাঘের উপদ্রব রোধে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা দয়ারামের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও দ্রুত বাঘটিকে ধরার দাবি জানান।
গ্রামবাসীরা আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই অঞ্চলে একাধিকবার বাঘকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে এবং বন দফতরে একাধিক অভিযোগ জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি।
বন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগেও পিলিভীত জেলায় গত দুই মাসে আরও পাঁচজন বাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। – ১৪ মে, নাজিরগঞ্জ গ্রামে সেচ দেওয়ার সময় হংসরাজ নামে এক কৃষককে বাঘে মারে। – ১৮ মে, চাটিপুর গ্রামে আখ কাটার সময় রাম প্রসাদ নিহত হন। – ২৫ মে, খিরকিয়া বারগদিয়া গ্রামে আগাছা তোলার সময় লউংশ্রী নামে এক মহিলাকে বাঘ হত্যা করে। – ৩ জুন, শান্তিনগর গ্রামের রেশমাকে তার বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে বাঘ হত্যা করে। – ৯ জুন, মেওয়াতপুর গ্রামের আরেক কৃষকও একইভাবে নিহত হন।
এখন দয়ারামের মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়জনে।
বন আধিকারিক ভরত কুমার জানিয়েছেন, দয়ারামের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কোন বাঘটি হামলা চালিয়েছে, তা ময়নাতদন্ত ও তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।