সেই ১৯৭৭ সালের কথা। মধ্যপ্রদেশের দমোহ জেলার কারাগারের ভিতরে একটি মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। মন্দিরের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরে ওই জেলের বন্দীরা সকলে হাত মিলিয়ে ভগবান হনুমানজির ১২ ফুটের একটি বিশাল মূর্তি তৈরি করেছিলেন। ১৯৮০ সালে মন্দিরের ভিতরে এই মূর্তিটি স্থাপন করা হয়।
ওই সময় থেকেই বন্দীদের বিশ্বাস, যিনি বজরঙ্গবলীর দরবারে গিয়ে ভক্তি ভরে পুজো দেন, তাঁর সমস্ত মনের বাসনা পূরণ হয়। কারাগারে যখন নতুন কয়েদীর আগমন ঘটে, তখন তিনি লাল দরজা পেরিয়ে হনুমানজি মহারাজকে দর্শনের সৌভাগ্য লাভ করতে পারেন।
advertisement
যে দিন থেকে হনুমানজির মূর্তি জেলা কারাগারের প্রাঙ্গণে স্থাপিত হয়েছে, সেই সময় থেকে আজ অবধি সেখানে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে হনুমান জয়ন্তী পালন করার রীতি চলে আসছে। হনুমান জয়ন্তীর পবিত্র দিনটায় বন্দীরা সকাল থেকেই রামচরিত মানস পাঠ করেন। এর পর তাঁরা ভক্তি ভরে সুন্দর করে সাজান ভগবান হনুমানজির মূর্তি। আর প্রতি বছর হনুমানজির পায়ে একটি করে নতুন ঘণ্টা নিবেদন করা হয়।
তবে এই বছর ওই রীতিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। সমস্ত পুরনো ঘণ্টা সরিয়ে দেওয়া হয়। চলতি বছরের হনুমান জয়ন্তীতে একটি ৩০ কেজি ওজনের নতুন ঘণ্টা এবং একটি ১.২৫ কেজি ওজনের রৌপ্য ছত্র দান নিবেদন করা হয়েছে। এর পর হোম-যজ্ঞ, পুজোর করে ভোগ চড়ানোর পরে বন্দীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। জেলের বন্দীরা হনুমানজীর দরবারে যান এবং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতাপ করেন। এমনকী ঈশ্বরের কাছে ক্ষমাও চান। কারাগারের ভিতরে বসে হনুমানজির দরবারে জানানো প্রতিটি মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলেই বন্দীদের বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: Weather Update: আবহাওয়ার ব্যপক ভোলবদল! দু-তিন ঘণ্টার মধ্যেই শিলাবৃষ্টির সতর্কতা, ভিজবে শহর
এই প্রসঙ্গে সিনিয়র জেল ডেপুটি সুপার সিএল প্রজাপতির কথায়, “১৯৮০ সালে এখানে বন্দীরা প্রথম বারের জন্য এই মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। এই মূর্তিটি ১২ ফুট উঁচু এবং বিশালকার। আর দমোহ জেল এমনই একটি কারাগার। যেখানে এত বিশালাকার হনুমানজির মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। যেটা আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না।” এমনকী সিএল প্রজাপতি এ-ও জানান যে, তিনি নিজেই হনুমানজির দরবারে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। আর আশ্চর্যের বিষয়, এক মাসের মধ্যে তাঁর সেই মনোবাসনা পূরণ হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Mental Health: মনের খবর কে ই বা রাখে? এবার সেই মনের খবর রাখতে এগিয়ে এল একদল পুলিশ
তিনি আরও যোগ করেন যে, লাল কাপড়ে নারকেল মুড়ে হনুমানজি মহারাজের দরবারে নিবেদন করা হয়। ভক্ত বন্দিদের ইচ্ছা পূরণ হলে তাঁরা জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে ভাণ্ডারা হয়। ভগবান হনুমানজির দরবারে ভাণ্ডারা এবং প্রসাদও বিতরণ করা হয়। তবে এই কথা সত্যি যে, কারাগারের অন্দরে স্থাপিত ভগবান হনুমানজিই আসলে এই জেল প্রাঙ্গণের সিদ্ধিদাতা।