আসলে দিল্লির (Delhi) নিকটবর্তী সিংঘু সীমান্ত (Singhu Border), যেখানে ডেরা ফেলেছেন প্রতিবাদরত কৃষকেরা, সেই আন্দোলনের এলাকা একের পর এক সাক্ষী থাকছে নানা মানবিক মুহূর্তের। প্রচণ্ড শীতে যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে উষ্ণ বিছানার। মহিলাদের জন্য বসেছে অস্থায়ী টয়লেট (Toilet)। যাতে কৃষকদের অভুক্ত থাকতে না হয়, সে জন্য বসেছে অত্যাধুনিক রুটি মেশিন (Roti Machine), যা ঘণ্টা পিছু ২০০০টি রুটি বানিয়ে দিতে পারে। একটি তাঁবুর মধ্যে বসেছে ২৫টি ফুট মাসাজার (Foot Massagers) মেশিনও, যাতে দূর থেকে হেঁটে আসা কৃষকেরা স্বচ্ছন্দে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেন।
advertisement
এর পাশাপাশি যখন কৃষকদের পাতে বিরিয়ানির (Biryani) মতো দেখতে এক চালের পদ এবং তার পরে বার্মি আর ভোপারাই কালান গ্রামের ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের উদ্যোগে পিৎজা লঙ্গর (Pizza Langars) খোলার ছবি ভাইরাল হল, সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠল তীব্র ধিক্কার। যাঁরা ধিক্কার জানাচ্ছেন, তাঁদের বক্তব্য তো একটাই- কৃষক যখন, মাঠে পরিশ্রম করবে! এ ভাবে পিকনিকের (Picnic) মতো করে দিন কেন কাটাবে তারা?
https://twitter.com/Dhruv_Sanghi_/status/1337395986553921537?s=20
https://twitter.com/ExSecular/status/1337589791299276800?s=20
বিরিয়ানির সূত্র ধরে অনেকেই আপাতত এই কৃষক আন্দোলনকে শাহিনবাগ ২.০ বলতে শুরু করে দিয়েছেন। CAA আইনের বিরোধিতা করে যখন শাহিনবাগে (Shaheen Bagh) প্রতিবাদসভা বসেছিল, সেই সভাতেও বিরিয়ানি বন্টন করা হয়েছিল এক সংস্থার উদ্যোগে। এ বার সেই সূত্র ধরে দেশের কৃষক আন্দোলনকেও কটাক্ষ করছেন এই দেশবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, খুব তাড়াতাড়ি এই আন্দোলনে এ বার একে একে যোগ হবে জাকুজি, সনা বাথ, মিনি পুল, জিম ইক্যুইপমেন্ট, বিউটি পার্লার, নেল পার্লার, হেয়ার সালন, ড্রাগ জয়েন্ট, অ্যালকোহল জয়েন্ট!
কথা হল, হরিয়ানা (Haryana) এবং পঞ্জাবের (Punjab) যে কৃষকেরা এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই কিন্তু রীতিমতো বিত্তবান। কৃষক মানেই ধূলিধূসরিত চেহারা আর অভাব- চির দিনের চেনা এই ছবি সিংঘুর আন্দোলনের সঙ্গে মিলছে না বলেই সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন এই নেটিজেনরা। তা ছাড়া, বলা হয়ে থাকে যে বাবরের সেনাদলের খাদ্য হিসেবে প্রথম তৈরি হয়েছিল বিরিয়ানি। যুদ্ধরত সেনাদের খাবার তৈরির বিলাসিতার সময় নেই, তাই চাল-মাংস-মশলা একসঙ্গে দমে রেখে একটা কিছু বানিয়ে নেওয়া হত! আবার, পিৎজাও (Pizza) ছিল শ্রমিকশ্রেণীর খাবার; কাজে যাওয়ার সময়ে ইতালির শ্রমিকগিন্নিরা স্বামীদের বাসি রুটির উপরে ঝড়তি-পড়তি যা আছে মাখিয়ে, গরম করে হাতে তুলে দিতেন! যা পরে পরিণত হয়েছে দামি এবং বিলাসিতার খাবারে!
এগুলো মনে না রেখে সমালোচনা কি নিজেকেই হাস্যাস্পদ করে তোলা নয়?