সুপ্রিম কোর্ট কোন ক্ষমতা ব্যবহার করেছে?
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, এই ধরনের কৌশলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যাতে ধ্বংস না হয়, তা নিশ্চিত করতে আদালত বাধ্য। সিজেআই বলেছেন যে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আর নীতিগুলি রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার করা আদালতের দায়িত্ব। গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিয়ে সংবিধানের ১৪২ আর্টিকেলের অধীনে অধিকার ব্যবহার করেছে আদালত।
advertisement
সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ বলেছে, আমরা এই মতামত দিয়েছি যে, এই ধরনের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের এক্তিয়ারের মধ্যে সংবিধানের ১৪২ ধারা ব্যবহার করতে বাধ্য। যাতে নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া ব্যর্থ না হয়। এটা ঘটতে পারে।
সংবিধানের ১৪২ আর্টিকেল কী?
সংবিধানের ১৪২ আর্টিকেলে সুপ্রিম কোর্টকে ‘সম্পূর্ণ বিচার’-এর অধিকার দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ আর্টিকেলে বলা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে কোনও আইনি সমাধান দৃশ্যমান নয় কিংবা অন্য কোনও উপায় নেওয়া যায় না, সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিরোধ সমাধান করার ক্ষমতা রয়েছে। কিংবা এটি নিষ্পত্তির জন্য তার এক্তিয়ারের মধ্যে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট অনিরুদ্ধ শর্মা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন যে, সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের ১৪২ আর্টিকেল সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের অধিকার দেওয়া হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বা কোনও আইনে ত্রুটি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে আদালত ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য এই আর্টিকেলটি ব্যবহার করে।
আর্টিকেল ১৪২ কখন ব্যবহার করা হয়েছে?
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই অনেক ক্ষেত্রে ১৪২ ধারা ব্যবহার করেছে। সবচেয়ে আলোচিত মামলা অযোধ্যা জমি বিরোধ। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট জমি বিরোধ হিন্দু পক্ষের পক্ষে রায় দিলেও ১৪২ ধারা ব্যবহার করে মুসলিম পক্ষকে ৫ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একই ভাবে, ১৪২ ধারায় ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের বাধ্যতামূলক বিনামূল্যে শিক্ষা এবং বিচারাধীন বন্দিদের অর্ধেক সাজা পূর্ণ করার পরে মুক্তি দেওয়ার আদেশও দেওয়া হয়েছিল।
মহিলা সেনার অধিকার:
কিছু সময় আগে সুপ্রিম কোর্ট ১৪২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা ব্যবহার করে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশন দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল।
রিটার্নিং অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন সিজেআই:
ব্যালট পেপারে কারচুপির অভিযোগে রিটার্নিং অফিসার অনিল মসীহকেও আদালতে তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সিজেআই নিজেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, এটা খুবই গুরুতর বিষয়। আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করছি, আপনি যদি সঠিক ভাবে তার উত্তর না দেন, তাহলে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ব্যালট পেপারে কী মার্ক করছিলেন?
৩৪০ ধারা কী, যার অধীনে বিচারকাজ হয়?
অনিল মসীহের উত্তরে সন্তুষ্ট হননি সিজেআই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে, তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কারচুপি করেছেন। তাঁরা তাঁদের অধিকারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সিআরপিসি-র ৩৪০ ধারায় অনিল মসীহের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ৩৪০ ধারায় আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্যপ্রদান, বিভ্রান্তিমূলক, ভুল তথ্য উপস্থাপন, ভুল নথি দেখানো এবং আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।