এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে দেহরাদুনের সাহাসপুরের ধর্মাওয়ালা এলাকায়। অভিযোগ, শিশুকে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে সুস্থ করতে গিয়ে মা-ই তাকে জলের ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন। এই ঘটনায় শিশুটির বাবা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন এবং পুলিশ অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে।
advertisement
কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা? বিকাশনগরের থানার এসএইচও ভাস্কর লাল শাহ জানিয়েছেন, ধর্মাওয়ালার বাসিন্দা মুন্তাজির তাঁর স্ত্রী সবিয়া এবং ৭ মাসের কন্যাসন্তান বুরিরার সঙ্গে বাড়িতেই ছিলেন। সকাল ৭:৩০ নাগাদ তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তাঁদের মেয়ে বিছানায় নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর অবশেষে বাড়ির ছাদে থাকা জলের ট্যাঙ্কিতে শিশুটির নিথর দেহ পাওয়া যায়।
তিনি স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে সবিয়া ভয় পেয়ে যান। পরে তিনি স্বীকার করেন, মেয়েকে সুস্থ করার জন্য ঝাড়ফুঁকের সময় সে জলের ট্যাঙ্কিতে পড়ে যায়।
মুন্তাজির জানিয়েছেন, তাঁদের ৭ মাসের শিশুকন্যা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেও সুস্থ হচ্ছিল না। এতে তাঁর স্ত্রী খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ঝাড়ফুঁকের ওঝাদের কাছে যেতে শুরু করেন। তাঁকে তাবিজ ও কিছু বিশেষ উপায়ের কথা বলা হয়। সেই পরামর্শ মেনেই তিনি গভীর রাতে মেয়েকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করার চেষ্টা করছিলেন।
অভিযুক্ত নারী জানান, গভীর রাতে তিনি পরিবারের সবার ঘুমিয়ে যাওয়ার পর শিশুটিকে ছাদে নিয়ে যান। সেখানে জলের ট্যাঙ্কির পাশে বসে তিনি ঝাড়ফুঁক করছিলেন। ঠিক তখনই শিশুটি অসাবধানতাবশত ট্যাঙ্কির মধ্যে পড়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে তিনি নিচে চলে আসেন এবং কিছুই ঘটেনি এমনভাবে নিজের কাজ করতে থাকেন।
পরবর্তীতে শিশুটির নিথর দেহ জলের ট্যাঙ্কি থেকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনা প্রমাণ করে যে, ২১শ শতকের প্রযুক্তি ও চিকিৎসার যুগেও অনেকেই অন্ধবিশ্বাসে ডুবে থাকেন। চিকিৎসার পরিবর্তে ঝাড়ফুঁকের আশ্রয় নেওয়ার ফলে এক নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ চলে গেল।
এই ঘটনার পর শিশুটির বাবা পুলিশের কাছে স্ত্রী সবিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তদন্ত চলছে।