বাহাদুরপুরের বাসিন্দা রাজাবলী বলেন, তাঁর নিজের ভাই শত্রু হয়ে গিয়েছিল। তাঁর ছোট ছোট তিন সন্তান রয়েছে, যারা পড়াশোনা করছে। রাজাবলী বলেন, “আমি সারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় রান্না করতাম। একদিন ঠাকুর দর্শনের পরে যখন বাড়ি পৌঁছলাম, তখন ভাই দরজায় বসেছিলেন আর বউ ঘুমোচ্ছিলেন, হঠাৎ বোতলটা তুলে নিয়ে সে চোখের দিকে ছুড়ে মারেন।
advertisement
ছোট ছোট কথাবার্তায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজাবলী সবার বড়। কথোপকথনের সময় মাঝে মাঝে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হত। কিন্তু একদিন রাজাবলীর কনিষ্ঠ ও মধ্যম ভাইয়ের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে ঝগড়া হয়। তাঁর ছোট ভাই রাজাবলীর সঙ্গে থাকতেন। এখন ছোট ভাইকে কেন নিজের কাছে রাখেন, তা নিয়ে অন্য এক ভাই ঈর্ষান্বিত ছিল। প্রথমে তারা রাজাবলীর গবাদি পশুদের ক্ষতি করতে শুরু করে। এরপর দুই ভাইয়ের চাপে রাজাবলীর জীবন পুরোপুরি তছনছ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ‘তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই…’, মোহময়ী গলায় লাস্যময়ীর ফোন! অবিনাশ পৌঁছলেন আলিগড়, তারপর কী ঘটল? হাড়হিম
একদিন বড় ভাই রাজাবলী বাইরের কাজ সেরে বাড়ি ফিরলেন। দরজায় বসা মধ্যম ভাই হঠাৎ বোতলটি তুলে নিয়ে বড় ভাইয়ের চোখের দিকে ছুড়ে মারেন। এই বোতলে অ্যাসিড ছিল, রাজাবলীর উপর তা পড়তেই তিনি চিৎকার করে ওঠেন। এরপরই ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করা হয় তাঁকে। অবশেষে চিৎকারের শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে প্রাণ বাঁচান। লোকজন তৎক্ষণাৎ রাজাবলীকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। আঘাত ও ব্যথা আস্তে আস্তে কমলেও দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়।
বর্তমানে, রাজাবলী তার ছোট সন্তানের সাহায্য নিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বালিয়ার ডিএম অফিস কমপ্লেক্সে অবস্থিত চন্দ্রশেখর উদ্যানের গম্ভরী বাবা মন্দিরে আসেন। তিনি বলেন, যে তিনি শুরু থেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন, কিন্তু ঈশ্বরের মনে অন্য কিছু ছিল। তবুও রাজাবলীর ঈশ্বরে ভরসা রয়েছে। তিনি জানান, এখন কিছুই করতে পারছেন না, তার ছোট ভাই পরিশ্রম করে পুরো পরিবারকে খাওয়াচ্ছেন।
রাজাবলী বলেন, বর্তমানে যে ভাই তাঁর উপরে অ্যাসিড হামলা করেছিল, তিনিও খুশি নয়। তিনিও নিশ্চয়ই আফসোস করেছেন। রাগের মাথায় কখনই এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয় যা কারও জীবন নষ্ট করে। এটি একটি বড় উদাহরণ। পরিবারে তর্ক বা ছোটখাটো ঝগড়া বিবাদে পরিণত হয়, তবে এতে কখনই খারাপ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়।