প্রেমিককে ঠকানোর জন্য প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেছিল মুসকান৷ শরণাপন্ন হয়েছিল স্ন্যাপচ্যাটের৷ সেখানে সে নকল পরিচয়ে সাহিল শুক্লার সঙ্গে চ্যাট করত৷ ক্রমে সাহিলের বিশ্বাস হয়েছিল যে তার মৃত মায়ের পুনর্জন্ম হয়েছে৷ তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের ধারণা, এভাবে চ্যাট করে প্রেমিককে বশ করে সে৷ বাধ্য করে তার সঙ্গে হত্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে৷ এমন নয় যে সাহিলের মায়ের নামে চ্যাট করত সে৷ কিন্তু পরিচয় গোপন রেখে এমনভাবে চ্যাট করত, সাহিলের মনে হত তার মৃতা মা ফিরে এসেছেন৷
advertisement
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে বিয়ে হয় সৌরভ রাজপুত এবং মুসকান রস্তোগীর৷ ৩ বছর পরই তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরে৷ ২০১৯ সালে আলাদা থাকতে শুরু করেন তাঁরা৷ তার কিছু আগে সে বছরই জন্ম হয় তাঁদের মেয়ের৷ কিন্তু স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক জানতে পারার পর একসঙ্গে থাকতে চাননি সৌরভ৷ চলতি বছর মেয়ের টানে লন্ডন থেকে দেশে আসেন তিনি৷ গত ২৮ ফেব্রয়ারি ছিল তাঁর মেয়ের ৬ বছরের জন্মদিন৷ এর পর ৪ মার্চ থেকে তিনি নিখোঁজ৷ প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় মুসকান ও সাহিল। অভিযোগ, ৪ মার্চ সৌরভের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় মুসকান এবং সাহিল তাকে ছুরির আঘাতে খুন করে। এরপর, মুসকান ও সাহিল মৃতদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে একটি ড্রামে ভরে এবং ভেজা সিমেন্ট দিয়ে তার মুখ বন্ধ করে দেহটি ফেলে দেয়।
এর পর প্রেমিকের সঙ্গে হিমাচলে বেড়াতে চলে যায় মুসকান৷ ফিরে এসে তাকে বাড়িওয়ালার হুকুমে বাড়ি ছাড়ার তোড়জোড় শুরু করতে হয়৷ সে সময়েই মিস্ত্রিদের হাতে ওই বড় ড্রামের বন্ধ মুখ খুলে যায়৷ কারণ ড্রামটি সরাতে সমস্যা হচ্ছিল তাঁদের৷ ঢাকনা খুলে যেতেই বেরিয়ে আসে পচা গন্ধ এবং সৌরভের দেহাংশ৷ তার পরই পুলিশের জালে ধরা পড়ে মুসকান এবং তার প্রেমিক সাহিল৷ তদন্তকারীদের দাবি, দু’জনেই জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে৷ তাদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে৷
তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের ধারণা, নভেম্বরেই স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা ছকে ফেলে মুসকান৷ নিহত সৌরভের দিদির অভিযোগ, তাঁর ভাইয়ের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছিল মুসকান এবং তার প্রেমিক৷ পাশাপাশি, সৌরভের মায়ের অভিযোগ, ৬ বছরের মেয়ের সামনেই খুন করা হয় তাঁর ছেলেকে৷ কারণ ওই শিশুকন্যা পড়শিদের বলেছিল, তার বাবা ড্রামের মধ্যে আছে৷ তখন ছোট বলে তার কথায় কোনও গুরুত্ব দেয়নি কেউ৷