আসন্ন উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীদের নিয়ে সোনামুড়ায় মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে গিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক বক্তব্য ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সোনামুড়া মহকুমা শাসক কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা করার আগে বিজেপির দুই প্রার্থীকে নিয়ে শহরে একটি বিশাল মিছিল করা হয়। ২০ বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন এবং ২৩ ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বিন্দু দেবনাথের সমর্থনে এদিন সোনামুড়ায় শাসক দলের তাবড় তাবড় নেতৃত্ব সামিল হন।
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা সহ প্রদেশ নেতৃত্ব এই মেগা আসরে যোগদান করেন। ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত দুই প্রার্থীকে নিয়ে পৃথক দুটি মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে সোনামুড়ার নেতাজী চৌমুহনী এলাকায় নির্বাচনী সমাবেশ স্থলে জড়ো হয়। সেখানে অন্যতম বক্তা হিসেবে দলের কার্যকর্তাদের সম্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। রাজ্যের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে তিনি বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেন। বিশেষ করে নির্বাচনী আঁতাত নিয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসকে ফের একবার নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিরোধীদের পায়ের তলায় জমি অবশিষ্ট নেই। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে এখন তারা একে অপরের হাত ধরে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনেও এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন রাজ্যের মানুষ। কীভাবে এক দলের অফিস থেকে আরেক দলের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন বের হয়। কিছুদিন আগেও সিপিএম অফিসে গিয়ে মিটিং করে এসেছেন বহু পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। অথচ দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরের বাম শাসনে তাদের শয়ে শয়ে মানুষ খুন হয়েছেন ওদের হাতে। বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এখন তারাই একে অপরের হাত ধরাধরি করছে। কী মানসিকতা তাদের? এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, গত বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধীদের একাংশ সদস্য সভায় টেবিলে দাঁড়িয়ে রেম্প শো করেছেন। সবাই এটা দেখেছেন। এধরনের আচরন থেকেই তাদের মানসিকতা চিন্তাভাবনার প্রতিফলন হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করে। মানুষের সার্বিক কল্যাণই এই দলের অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সবসময় উন্নয়নের কথা বলেন এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্যই হিরা মডেল উপহার হিসেবে পেয়েছে ত্রিপুরা।
রাজ্যে এখন ৬টি জাতীয় সড়ক হয়েছে। আরো চারটি গড়ার প্রক্রিয়া চলছে। রেল সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যে। এখন ত্রিপুরা থেকে ১২টির মতো এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। ডেমো ট্রেন পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের কারণেই দ্রুত এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা।
আরও পড়ুন, ভোটের দিন ঘোষণা হল না, মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিসগঢ়ে প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা বিজেপির
আরও পড়ুন, পার্থর নাকতলার বাড়ি থেকেই…! এসএসসি নিয়োগ মামলায় চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআই-এর
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সব কা সাথ, সব কা বিকাশ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই কাজ করছে এই সরকার। মানুষের বিকাশের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার। এই পার্টি খুবই সুশৃঙ্খল পার্টি। উশৃঙ্খলতায় বিশ্বাস করে না এই দল। এবারও মানুষ ধনপুর এবং বক্সনগর কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বক্সনগর ও ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচন। ৮ সেপ্টেম্বর হবে ভোট গণনা।