৫৯ বছর বয়সেও অদম্য উৎসাহ নিয়ে সুজান পাড়ি দিয়েছিলেন এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে৷ কিন্তু, এভারেস্ট জয়ের আগে প্রাথমিক অ্যাক্লিমেটাইসেশন প্রসেসেই বারবার থমকে পড়ছিলেন৷ তাঁর বয়স, তাঁর স্বাস্থ্য, তাঁর শরীর, তাঁর ইচ্ছের পথে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল৷
আরও পড়ুন: ডাল লেকে নামল মেরিন! লালচক তোলপাড় করে তল্লাশি, আবার কী হল ভূ-স্বর্গে?
advertisement
সুজানের এভারেস্ট অভিযান যে সংস্থার তরফে আয়োজিত করা হয়েছিল, সেই গ্লেসিয়ার হিমালয়ান ট্রেকের চেয়ারম্যান ডেন্ডি শেরপা বলেন, ‘‘আমরা ৫ দিন আগেই ওঁকে অভিযান ছেড়ে নেমে আসার পরামর্শ দিয়েছিলাম৷ কিন্তু উনি বদ্ধ পরিকর ছিলেন যে এভারেস্টে উঠবেনই৷ কারও কথা শুনছিলেন না। শেষে ওঁকে জোর করে লুকলাতে নামিয়ে আনা হয়৷’’
এভারেস্ট অভিযানের আগে, শরীরকে ওই উচ্চতায় ধাতস্থ করার জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়৷ তাকে অ্যাকলিমেটাইজেশন বলে৷ এক্ষেত্রে, পর্বতারোহীরা, বেস ক্যাম্প থেকে কিছুদূর উঁচুতে উঠে সেখানে এক বা দুদিন কাটান, তারপর আবার নেমে আসেন৷ এমন ২-৩ বার করতে হয় মূল অভিযান শুরুর আগে৷
নেপালের পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, সুজান মাত্র ২৫০ মিটার উঁচু ক্রম্পটন পয়েন্টেই পৌঁছতে পারছিলেন না৷ যে দূরত্ব পৌঁছতে অন্য পর্বতারোহীদের মাত্র ২০-৩০ মিনিট লাগে, সুজানের তা প্রথম দিন লেগেছিল ৫ ঘণ্টা, দ্বিতীয় দিন ৬ ঘণ্টা, ও তৃতীয় দিন ১২ ঘণ্টা৷
এরপরেই তাঁকে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ কিন্তু, সুজান নাকি জানিয়েছিলেন, এভারেস্টে ওঠার পারমিশন পেতে তাঁকে মোটা টাকা দিতে হয়েছে৷ তাই এভারেস্ট জয় না করে তিনি ফিরতে পারবেন না৷
কিন্তু, পাহাড় কারও জেদ মানে না৷ পাহাড়ে কাছে সবসময় মাথা নিচু করে দাঁড়াতে হয়৷ বুঝতে হয় তার নির্দেশ, ইঙ্গিত৷ নাহলেই অবধারিত বিপদ৷ এমনকী, মৃত্যুও৷ এক্ষেত্রে, যেমনটা হয়েছে৷
শরীরের কথা শুনলে, না জেদ করলে হয়ত এমন অকালে প্রাণ হারাতে হত না সুজানকে৷