১৯৬৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আনা মিগ-২১ ছিল ভারতের প্রথম সুপারসনিক যুদ্ধবিমান। স্বল্প খরচে দ্রুত গতি এবং আকাশযুদ্ধে কার্যক্ষমতার কারণে খুব দ্রুত ভারতীয় বায়ুসেনার নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠে। একসময় প্রায় ৮০০-র বেশি মিগ-২১ ভারতীয় বায়ুসেনায় ছিল, যা একসঙ্গে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন– সাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, ঝড়-বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ দক্ষিণের অধিকাংশ জেলায়
advertisement
মিগ-২১ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছে—১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ এবং ২০১৯ সালের বালাকোট স্ট্রাইক-এও এই যুদ্ধবিমান সক্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এতদিনে এই বিমান ভারতীয় আকাশে প্রায় ৬০ লাখ ঘণ্টা উড়েছে এবং ১,৬০০-র বেশি পাইলট এতে ট্রেনিং নিয়েছেন।
তবে গৌরবের পাশাপাশি মিগ-২১-কে ঘিরে রয়েছে একাধিক বিতর্ক ও দুর্ঘটনার কালো ইতিহাস। ১৯৭০-এর দশক থেকে ক্র্যাশের ঘটনা বাড়তে থাকে। বিগত কয়েক দশকে ৪০০-র বেশি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০০ জন বায়ুসেনা অফিসার ও পাইলট। পুরনো প্রযুক্তি, যন্ত্রাংশের অভাব এবং সীমিত আপগ্রেডের কারণেই ধীরে ধীরে এটি হয়ে ওঠে ‘ফ্লাইং কফিন’—একটা উড়ন্ত বিপদ। বর্তমানে ভারতের হাতে মিগ-২১-এর কেবল একটি স্কোয়াড্রন (২৩ নম্বর ‘প্যান্থার্স’ স্কোয়াড্রন) রয়েছে, যেটি এখন চূড়ান্ত অবসরের পথে। এর পর আর কোনও মিগ-২১ থাকবে না ভারতীয় বায়ুসেনার পরিষেবায়।
এই যুদ্ধবিমানের অবসরের পর বায়ুসেনার সক্রিয় ফাইটার স্কোয়াড্রনের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে মাত্র ২৯-এ, যা গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও সরকার ইতিমধ্যেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান ‘তেজস’ এবং বিদেশ থেকে কেনা রাফাল ও সুখোইয়ের মতো আধুনিক ফাইটার জেট দিয়ে এই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছে।