TRENDING:

চিন সীমান্তে দারুণ 'চাল' ভারতের! ভুটানের সঙ্গে ৪,০০০ কোটি টাকার এই রেল প্রকল্পের আসল কারণ জানেন?

Last Updated:

India Bhutan Railway ভুটানে তৈরি হতে চলা রেললাইন শুধুমাত্র যোগাযোগের পথ নয়, এটি চিনের কৌশলগত পদক্ষেপের জবাবও। ডোকলাম থেকে শুরু হওয়া পুরো গল্পটাই বুঝে নেওয়া দরকার।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
ভারত ভুটানে রেললাইন তৈরি করতে চলেছে। আপনি হয়তো এই খবর শুনেছেন, কিন্তু এর সমস্ত দিক বোঝা খুব জরুরি। কারণ, এই রেললাইন কোনও সাধারণ প্রকল্প নয়। প্রশ্ন হল, কোথায় তৈরি হবে এই রেললাইন? আসুন, জেনে নেওয়া যাক বিশদে।
ভারতের এই রেল প্রকল্প শুধু ভুটানের জন্য নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত এবং পূর্ব ভারতের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। একইসঙ্গে চিন সীমান্তে ভারতের কৌশলগত অবস্থানকেও আরও শক্তিশালী করবে।
ভারতের এই রেল প্রকল্প শুধু ভুটানের জন্য নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত এবং পূর্ব ভারতের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। একইসঙ্গে চিন সীমান্তে ভারতের কৌশলগত অবস্থানকেও আরও শক্তিশালী করবে।
advertisement

আসলে এটি একটি নয়, দুটি রেললাইন। এত দিন ভুটানে কোনও ট্রেন যায়নি, কোনও রেলপথ ছিল না। এবার ভারত ভুটানকে দু’দিক দিয়ে রেলের সঙ্গে যুক্ত করতে চলেছে। আর এর জন্য খরচ হবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ এই প্রকল্প কেন, এর উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য কী? সেটা বোঝার আগে আগে দেখা যাক, কোথায় তৈরি হবে এই রেললাইনগুলো।

advertisement

পুলিশও নিরাপদ নন! ফাঁকা বাড়িতে পড়ে মহিলা কনস্টেবলের অনাবৃত দেহ! শরীর জুড়ে ক্ষত…

বর্ষার শেষ ‘কামড়’! বঙ্গোপসাগরে নতুন নিম্নচাপের খেল শুরু! বাংলা-সহ দেশের কোথায় কী প্রভাব? এল আবহাওয়ার বড় আপডেট!

প্রথমেই ভুটানের মানচিত্রে চোখ রাখা দরকার। ভুটান–ভারত সীমান্ত প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। পশ্চিম দিক থেকে ভুটানের সীমান্ত শুরু হয় সিকিমের সঙ্গে। তবে ভুটান–সিকিম সীমান্ত মাত্র ৩২ কিলোমিটার। এরপর ভুটানের দক্ষিণে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং–শিলিগুড়ি এলাকা। ভুটান–বাংলা সীমান্তের দৈর্ঘ্য ১৮৩ কিলোমিটার।

advertisement

ভারত বানাচ্ছে ভুটানের প্রথম রেললাইন, খরচ ৪ হাজার কোটি টাকা, কৌশলগতভাবে বড় পদক্ষেপ

advertisement

এর পর ভুটানের দক্ষিণে আছে অসম, আর ভুটান–অসম সীমান্ত ২৬৭ কিলোমিটার। ভুটানের পূর্বদিকে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং এলাকা। ভুটান–অরুণাচল সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২১৭ কিলোমিটার। অর্থাৎ ভুটানকে তিনদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ভারত—পশ্চিমে সিকিম, দক্ষিণে বাংলা ও অসম, আর পূর্বে অরুণাচল। আর উত্তরে? সেখানেই রয়েছে তিব্বত, অর্থাৎ চিন।

চুম্বি ভ্যালি ও ডোকলাম কেন গুরুত্বপূর্ণ?

advertisement

তবে মনে রাখতে হবে, ভুটানের পুরো পশ্চিম সীমান্ত সিকিমের সঙ্গে নয়, মাত্র ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যেই রয়েছে তিব্বত বা চিনের চুম্বি উপত্যকা, যা ভুটান ও সিকিমের মাঝখানে ছুরির মতো ঢুকে আছে। এই চুম্বি ভ্যালির দক্ষিণ প্রান্তে এসে মিলেছে তিন দেশের সীমান্ত। জায়গাটির নাম ভুটানে ডোকলাম, ভারতে দোকা লা, আর চিনে ডংলাং। হ্যাঁ, ডোকলাম নামটা নিশ্চয়ই মনে আছে? এখান থেকেই আসল গল্প শুরু।

কোথায় তৈরি হবে রেললাইন?

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। ভারত দুটি রেললাইন তৈরি করছে ভুটানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য। প্রথম লাইন হবে অসমের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলেপু পর্যন্ত। এটি হবে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন। এখানে তৈরি হবে ছ’টি নতুন স্টেশন। আর খরচ হবে প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকা, কারণ পাহাড়ি এলাকায় রেললাইন বানাতে বহু সেতু তৈরি করতে হয়। পাহাড়ি রেলপথ নির্মাণ সমতলের মতো সহজ নয়। জটিল প্রকৌশল কাজ, অসংখ্য ব্রিজ নির্মাণ—ফলে খরচও অনেক বেশি হয়ে যায়।

ভারত বানাচ্ছে ভুটানের প্রথম রেললাইন, খরচ ৪ হাজার কোটি টাকা, কৌশলগতভাবে বড় পদক্ষেপ

দ্বিতীয় রেললাইন কোথায় তৈরি হবে?

ভুটানের সঙ্গে ভারতের দ্বিতীয় রেললাইন তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার বানেশ্বরী থেকে ভুটানের সামতসের পর্যন্ত। এই লাইনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। তুলনামূলকভাবে এটি ছোট হলেও কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই রেললাইন?

এখন পর্যন্ত ভুটানের সঙ্গে ভারতের সড়কপথে যোগাযোগ থাকলেও কোনও রেল যোগাযোগ ছিল না। ফলে পরিবহণ, বাণিজ্য, পর্যটন—সব ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা ছিল। রেললাইন তৈরি হলে ভুটানের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ আরও শক্তিশালী হবে।

  1. অর্থনৈতিক দিক থেকে:
    ভুটানে প্রচুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। রেললাইন তৈরি হলে বিদ্যুৎ, পণ্য এবং কাঁচামাল পরিবহণ অনেক সহজ হবে। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির বাজার এবং শিল্পেও এর সুফল পড়বে।

  2. ভূরাজনৈতিক দিক থেকে:
    ভুটান চিন সীমান্তের খুব কাছে। ডোকলাম সংকটের পর থেকে ভুটানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও কৌশলগত হয়ে উঠেছে। রেলপথ তৈরি হলে ভুটান ভারতের আরও কাছে আসবে এবং চিনের প্রভাব সীমিত থাকবে।

  3. পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়:
    ভুটান ভারতের পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় জায়গা। সরাসরি রেল সংযোগ তৈরি হলে পর্যটনের পরিমাণ আরও বাড়বে। একইসঙ্গে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কও দৃঢ় হবে।

মোট বিনিয়োগ

দুটি রেললাইন মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোকরাঝাড়–গেলেপু লাইনেই খরচ হবে ৩,৫০০ কোটি টাকা, আর বানেশ্বরী–সামতসে লাইনে ৫০০ কোটি টাকা।

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
চিন সীমান্তে দারুণ 'চাল' ভারতের! ভুটানের সঙ্গে ৪,০০০ কোটি টাকার এই রেল প্রকল্পের আসল কারণ জানেন?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল