বুধবার বিদেশ মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আবেদনের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমাদের কাছে অনুরোধ এসেছে। বিচারবিভাগীয় এবং অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ—যার মধ্যে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া ও স্থিতিশীলতা অন্তর্ভুক্ত—রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকার বিষয়ে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
advertisement
‘চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় ফেলে…!’ পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ইমরান খানের বোনেদের, তদন্তের দাবি
আজ ৫ লক্ষ টাকার সোনা কিনলে ২০৩০ সালে তার দাম কত হবে? বিনিয়োগের আগে জেনে নিন
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এর আগেও শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়ে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছিল। নয়া দিল্লি সেই বার্তার প্রাপ্তিস্বীকার করলেও তার ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তা প্রকাশ করা হয়নি। সে সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় দেয়নি বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনাল।
৭৮ বছর বয়সি শেখ হাসিনাকে গত সপ্তাহে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড দেন। অভিযোগ—গত বছর ছাত্র আন্দোলনের সময় তাঁর সরকারের কঠোর দমনপীড়ন “মানবতাবিরোধী অপরাধ”-এর পর্যায়ে পড়ে।
জয়সওয়াল আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভারত গঠনমূলকভাবে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে।”
বাংলাদেশের তরফে দাবি করা হয়েছে, আগের অনুরোধে ভারত “কোনও জবাব দেয়নি”, তবে বর্তমানে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষিত হওয়ায় পরিস্থিতি “ভিন্ন”, এবং এবার নয়া দিল্লির কাছ থেকে উত্তর প্রত্যাশিত।
গত সপ্তাহে বিচারিক ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠায়।
গত বছরের জুলাই-অগস্টে বাংলাদেশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভের পরে ক্ষমতাচ্যুত হন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তার পর থেকে তিনি ভারতেই সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছেন। ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময়ে সে দেশে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয় হাসিনার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সেই মামলায় হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত। তার পরে হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ফের ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ভারতের সর্বশেষ জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকা। তাঁর বক্তব্য, “আমি আশা করি না যে অনুরোধ পাঠানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা জবাব দেবে, তবে আমরা উত্তর পাওয়ার আশা করছি।”
হোসেন বলেন, আইসিটি রায়ের পর বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে নয়া দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রত্যর্পণ অনুরোধ পাঠানো হয়েছে। দুই দেশের বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনেই অনুরোধটি জানানো হয়েছে।
